এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা গ্রামে অবস্থিত জনতা পাটকলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট প্রায় ১৮ ঘন্টা কাজ করেছে। সোমবার (১৩ ই সেপ্টেম্বর ) বেলা তিনটা পর্যন্তু চারটি ইউনিট আগুন লাগা পাটে পানি দেওয়ার কাজ করছিলো। পাটকল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মতে, আগুনে ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
পাটকল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পাটকলের তিন নম্বর ফ্লোরের উৎপাদন শাখায় রোববার দুপুরে হার্ডওয়েস্ট (গর্দ্দা) মেশিনের যান্ত্রিক ক্রটি থেকে আগুন লাগে। পাশের গুদামে সুতালি ও পাট থাকায় সেখানে আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
পাটকলের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, গতকাল (সোমবার) পর্যন্তু ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরোপুরি নির্ধারণ করা যায়নি। তবে দুটি গুদামে থাকা পাট ও সুতালি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া পাট পরিবহনের একটি ট্রলি গাড়ি, দুটি নছিমন, শ্রমিকদের ১০টি বাইসাইকেল ও মিলের ছোটবড় মোট ৮৮টি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পুড়ে ধ্বংস হয়েছে।
উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল আলম বলেন, মিলের পাঁচটি ফ্লোরের মধ্যে একটি বাদে বাকিগুলোতে উৎপাদন চালু আছে। প্রতিদিন তিন পালায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিক আমাদের এখানে কাজ করে। আগুনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে আমাদের মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। আকিজ গ্রুপের মালিকানাধীন এ পাটকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হেলিকপ্টার যোগে পাটকল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। এর ঘন্টা খানেক পরেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
গতকাল পাটকল চত্বরে এমডি শেখ বসিরউদ্দিন আহমেদ জানান, আমরা মাত্র নয় মাস আগে পারটেক্স গ্রুপের কাছ থেকে পাটকলটি কিনেছি। এটি আধুনিকায়নের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যেই আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটলো। আগুনে আমাদের মেশিনারিজ ও মালামালের ক্ষয়ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নয়টি ইউনিট প্রায় ১৮ ঘন্টা চেষ্টা করে পাটকলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পাটের আগুন ঝুঁকিপূর্ণ এবং সহজে নিভেনা, তাই আমাদের চারটি ইউনিট এখনও সেখানে কাজ করছে। পাটকল কর্তৃপক্ষ বিমা দাবি নিষ্পত্তির আবেদন করলে আমাদের মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে আমরা আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করবো।
সময় জার্নাল/এমআই