মেহেরুজ্জামান সেফু। সুখের স্কুল। সত্যিই তাই। শৈশব,কৈশোরে কতই না সুখের ছিলো স্কুল জীবন।
যে সুখ বৃদ্ধ বয়সে এসেও মানুষের মনকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কত মোহ, কত প্রণয়, কত মিত্র, কত গুরু। সব কিছুর সংমিশ্রণে মনে হচ্ছিলো যেন পার্থিব জীবনে বিশাল কিছু প্রাপ্তির চূড়ায় অবস্থান করেছি তখন। মনে হবেই না বা কেন, এখান থেকেই তো জীবনের সমস্ত সুখ সন্ধানের পথচলা শুরু। আর তাই সে সময়গুলো প্রতিটি জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। সে কারনেই হয়তো সেই সময় গুলো জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অবধি হৃদয় খাতায় জমা হয়ে থাকে স্বর্ণালী অক্ষরে।
কিন্তু জীবনের তো রয়েছে বহু রঙ। কখনো সে রঙে জীবন হয় রঙিন আবার কখনো মলিন। কখনো সেই সুখের স্কুলের দেখানো পথটা এগোতে থাকে তার আপন গতিতে আবার কখনো পথভ্রষ্ট হয়ে যায়। আর ঠিক তখনই মানুষের জীবন শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ভাবে হয়ে পরে বিপর্যস্ত। টেনশন, স্ট্রেস, ভয় এই সব মানুষের পজিটিভ শক্তিগুলোকে নষ্ট করে ফেলে। তাই বর্ণহীন, মলিন, পথভ্রষ্ট জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মনে হয় বিষাদময়। ঠিক সে সময়টা তে কি করে জীবনকে রাঙিয়ে তোলো যায়, আন্দোলিত করা যায়, উপভোগ করা যায়, ফিরে পাওয়া যায় সুখের পথ, আকরে ধরে রাখা যায় জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে।
এসব কিছুর চিন্তা থেকেই সুখী মানুষ চাই, স্লোগানে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জোবায়ের রুবেল প্রতিষ্ঠা করেন "সুখের স্কুল" নামের একটি অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। পার্থিব জীবনে কাজ করতে চান মানুষকে নিয়ে। গড়ে তুলতে চান একটি সুখী মানুষদের কমিউনিটি। আর সে লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন অবিচল।
করোনার এই সংকটাপন্ন অবস্থায়ও থেমে নেই তিনি। সুখের স্কুলকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন ভার্চুয়াল জগতে। সাধারণ মানুষকে মেন্টাল well-being নিয়ে সচেতন করতে আগামী ১০ জুলাই ২০২১ তারিখে সুখের স্কুল আয়োজন করছে, মেন্টাল ওয়েলবিং: করছি কি, করবো কি? শিরোনামে একটি ভার্চুয়াল রাউন্ড টেবিল। এ আলোচনার মাধ্যমে মানুষকে জানাতে চাই কিভাবে তারা এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে মেন্টালি ওয়েলবিং থাকা সম্ভব এবং কেন এমন পরিস্থিতিতে Mental Wellbeing থাকাটা জরুরী। উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ইউনাইটেড কিংডম এবং ইন্ডিয়া থেকে মোট ১০ জন আলোচক অংশগ্রহণ করবেন।
সুখের স্কুল সম্পর্কে জানতে চাইলে সুখের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জোবায়ের রুবেল বলেন, মানুষকে সুখী হতে উৎসাহিত করা, শিক্ষাদান করা এবং একটি সুখী মানুষের কমিউনিটি গড়ে তোলাই সুখের স্কুলে উদ্দেশ্য। বিশ্বাস করুন, টেনশন, স্ট্রেস, ভয় এই সব মানুষের পজিটিভ শক্তিগুলো নষ্ট করে দেয় এবং সাফল্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে। অন্যদিকে ক্ষমা, ভালোবাসা, শুভকামনা করা পজিটিভ শক্তিগুলোকে বৃদ্ধি করে; নিয়ে যায় সাফল্যের দিকে।
জীবনের এই যাত্রাটা আনন্দময় করে তোলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই Mental Well-being চর্চার মাধ্যমে জীবনের ইঁদুর দৌড় থেকে মানুষকে বের করে সুখী মানুষদের কমিউনিটিতে আনতে চাই। শারীরিক, মানসিক, আবেগীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আধ্যাত্মিকসহ মনোজাগতিক বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আমরা হতে চাই এক অনন্য মানুষ, অনন্য জাতি।
সুখের স্কুল মূলত তিন ধরনের কাজ করবে। ১. আওয়ারেনেস ক্রিয়েট করবে
মানুষকে হ্যাপিনেস সম্পর্কে সচেতন এবং উৎসাহিত করতে আমরা প্রোগ্রাম করব প্রতিমাসে। ২. এডুকেশন দেবে। আমরা আগামী মাসে হ্যাপিনেস কিছু ট্রেনিং লাঞ্চ করব। ৩. সুখী মানুষের কমিউনিটি গড়ে তুলবো। সুখের স্কুলে কমিউনিটি ইতিমধ্যে আমরা গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।
সুখের স্কুলটিতে রয়েছে অনলাইন কোর্স, ওয়ার্কশপ এবং সাপ্তাহিক গ্রুপ ডিসকাসনের মাধ্যমে নিজের ভেতরের শক্তিকে বিকশিত করার অন্যন্য সুযোগ। যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে বসেই পৃথিবীর সেরা মানুষদের সাথে থাকুন এবং সহজ উপায়ে শিখুন Mental Well-being চর্চার সেরা সব কৌশল। আপনিও যুক্ত হোন আমাদের হ্যাপি কমিউনিটিতে। আসুন একসাথে কাজ করি নিজের এবং সৃষ্টির সেবায়।
সময় জার্নাল