নিজস্ব প্রতিবেদক : কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্যতা ও পবিত্রতা সংরক্ষণে ১১ বছর আগে দেওয়া রায় বাস্তবায়নে নেওয়া পদক্ষেপ ও অগ্রগতি সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালত অবমাননার মামলার শুনানি নিয়ে রোববার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) দায়ের করা রিট মামলায় ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট বেশ কিছু নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের সেই ৮ নির্দেশনায় বলা হয়েছিল-
১. ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা নেয়া যাতে ভবঘুরে ঘোরাফেরা কিংবা অসামাজিক কার্যকলাপ চলতে না পারে।
২. মূল বেদীতে কোনো মিটিং-সমাবেশ থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে বেদীর পাদদেশে মিটিং-সভায় কোনো বাধা-নিষেধ থাকবে না।
৩. ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিত ভাষা সৈনিকদের জাতীয় পদক দিতে হবে।
৪. জীবিত ভাষা সৈনিকদের কেউ সরকারের কাছে কোনো আর্থিক সাহায্য চাইলে তা দিতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ এবং মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
৬. শহিদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ যাদুঘর প্রতিষ্ঠা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলন তথ্য সংক্রান্ত ব্রুশিয়ার রাখা, যাতে পর্যটকরা তথ্য জানতে পারেন।
৭. ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য বিবাদীদেরকে একটি কমিটি গঠন এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ এবং
৮. ভাষা সৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমতো সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করা।
তবে ওই রায় সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে বাদিপক্ষ হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) চলতি বছরের ৪ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওই রায় দেয়ার পরে ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও বাস্তবায়নের জন্য একাধিকবার আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এমনকি কতিপয় নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলেও যাদুঘর প্রতিষ্ঠা, ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। তাই আদালত আদেশে বিবাদীদেরকে তাদের পদক্ষেপ এফিডেভিট আকারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবাদীরা হলেন- মন্ত্রী পরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যন্সেলর, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, পূর্ত মন্ত্রণালয়, চিফ আর্কিটেক্ট, আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্ট প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এমআই