সজিব ইসলাম :
সেই ২০১০ সালের কথা, তখন কলেজে পড়ি ঢাকায়। ছুটিতে বাসায় এসেছি একদিনও হয়নি, এর মধ্যেই এলাকার দুই বছরের এক বড় ভাই হাজির, মার্সিডিজ বেঞ্চ এবং বিএমডব্লিউ নিয়ে। একজন মানুষ দুইটা গাড়ি নিয়ে আসলে অবাক হওয়ারই কথা। আমি উনার সব কথা শুনলাম, উনি আমাকেও গাড়ির মালিক বানিয়ে দিলেন গল্প করতে করতে। কিন্তু তাও আমি অবাক হলাম না।
বরাবরই আমার ভাগ্য খারাপ, এটা আমি বিশ্বাস করি। পরিশ্রম ছাড়াই যেখানে লাভ আছে, উন্নতি আছে এমন কোনো কিছুতে তাই কখনোই আমার আগ্রহ ছিল না, এখনো নেই। আমার পাশে যদি স্ব চক্ষে কাউকে দেখিও যে সে লাভবান হচ্ছে, তবুও সেটা আমাকে টানে না। কারণ আমি জানি তার ক্ষেত্রে হলেও আমার ক্ষেত্রে এটা হবে না।
বলছিলাম ডেস্টিনির কথা, আর ওই গাড়িগুলা উনি আসলে মুখে মুখেই নিয়ে এসেছিলেন। আমার কাছে সেটা গল্প মনে হলেও, উনার চোখ মুখ চক চক করছিল কিছুদিনের মধ্যেই গাড়ি কেনার স্বপ্নে।
তো যাই হোক আমার অফিসের কয়েকজন দেখলাম ইভ্যালি থেকে প্রায় অর্ধেক দামে জিনিস অর্ডার করে, এবং কিছুটা দেরি হলেও তারা প্রোডাক্ট পাচ্ছে। তখন উনাদেরকে বলতাম যে ভাই এখন প্রোডাক্ট পাবেন। কিন্তু ইভ্যালি ভেগে যাবেই, এরকম বিশ্বাস অর্জন করতে করতে যখন লাস্টবার সর্বোচ্চ অর্ডার পড়বে, তখন তারা ভাগবে। সেই লাস্ট দানে কারা ধরা খাবে এটাই বিষয়।
মানুষের সহজে বড়লোক হওয়ার বাসনা, হুট করে ভাগ্য খুলে যাওয়ার বাসনা অনেক বেশি। শুধু তাই না, পরিশ্রম না করেই এ+ পাওয়া, ৭ দিনে ইংরেজি শেখা, দুই মাসে ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার হওয়াসহ আরও শত শত বিষয় আছে, যেগুলো একই রকম।
এই সিম্পল মনোভাব কাজে লাগিয়েই হাজার কোটি টাকা পকেটে পুরে নেয়া যায়। যারা বুদ্ধিমান তাদের মধ্যে দুইভাগ আছে- এক ভাগ টাকা কামাচ্ছে আরেক ভাগ মানুষকে বুঝাতে চাচ্ছে যে এগুলা স্ক্যাম, এগুলাতে ইনভলভ হইয়ো না। কিন্তু কে শোনে কার কথা?
এসব স্ক্যাম বিজনেস অতীতে ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। সময়ে সময়ে রূপ পাল্টাবে।
শুধু একটাই কথা, যেটা শুনতে অবিশ্বাস্য সেটা আসলেই অবিশ্বাস্য। Nothing comes from nothing.