এহসান রানা, ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ই সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা-মকরমপুট্টি গ্রামের বিল নামক স্থানে এ নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তরুন সমাজ সেবক মনসুর মুন্সীর পৃষ্ঠপোষকতায় এ নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়। এতে সাইন্দা, বাছারী সহ ছোটবড় ১৫টি বাইচের নৌকা অংশগ্রহন করে। এ উপলক্ষে উপজেলার মকরমপট্টি গ্রামে আয়োজিত মঞ্চে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী গণ্যমান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগিতায় ৩ জন বিজয়ীসহ প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে এলইডি টেলিভিশন পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ শাহিনুর রহমান শাহিন, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিউদ্দিন মোল্লা, লিটন মাতুব্বর, মোতালেব মাতুব্বর, শাহাদাত হোসেন, এ্যাপোলো নওরোজ,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ খান, সমাজ সেবক শাহজাহান হাওলাদার, মতিয়ার রহমান সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবৃন্দ প্রমুখ।
নৌকাবাইচের পৃষ্ঠপোষক তরুন সমাজ সেবক মনসুর মুন্সী বলেন, এটা আমাদের আবহমান বাংলার প্রাণের ঐতিহ্য। কালের বিবর্তনে পৃষ্টপোষকতার অভাবে এই খেলাটি অনেকটাই হারিয়ে গেছে। পূর্বে থেকেই আমার বাপদাদারা পৃষ্টপোষকতা করণ এটি বাঁচিয়ে রেখেছিল। আজকের যুবসমাজ খেলাধুলা ও পড়াশুনা ছেড়ে মাদকের ছোবলে তাদের জীবন ধ্বংস হচ্ছে। মানুষকে কিছুটা নির্মল আনন্দ বিনোদনের মাধ্যমে তরুনদের বিপদগামী হওয়া থেকে খেলাধুলাসহ পড়াশুনায় মনোনিবেশ করানোই আমার লক্ষ্য।
সভায় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আমাদের ঐতিহ্য ফিরে এসেছে।
এ্যাপোলো নওরোজ বলেন, আমাদের বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে মানুষের মধ্যে আমাদের শেকড়কে লালন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ী চৌকিঘাটার টোকন মাতুব্বর এবং পুকুরপাড় গ্রামের পিরু মিয়া বলেন, প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়ে আমরা খুবই উচ্ছ্বাসিত।
এদিকে রশিবপুরা-মকরমপট্টি গ্রামের বিলে গ্রাম বাংলার প্রাচীন এই জলক্রীড়া দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে আসা হাজার বিনোদনপ্রেমী দর্শক এটি উপভোগ করেন। সকাল থেকেই দুরদুরান্ত থেকে শত শত মানুষ ডিঙ্গি নৌকা ও অন্যান্য ভাসমান নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। নৌকাগুলোর মাল্লারা যখন রং-বেরংয়ের পোশাক পরে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, ঐকতানে বৈঠাগুলো অপূর্ব ভঙ্গিমায় আন্দোলিত হয় এবং হেইয়ো হেইয়ো রবে এগিয়ে যায় তখন তীরে এবং নৌকায় থাকা দর্শকরা করতালী দিয়ে তাদের স্বাগত জানান। নৌকা বাইচ উপলক্ষে গ্রামের রাস্তা এবং আশপাশে বসে মেলা। মেলায় আগতরা নানা রকম পশরা সাজিয়ে বসে। নারী ও শিশুরাও মেলায় ভীড় করে নানা রকম সামগ্রী ক্রয় করতে।
সময় জার্নাল/এমআই