মুখোমুখি সন্ধ্যা
কত কাল কেটে গেল মুখোমুখি সন্ধ্যায় স্বপ্ন পোষি না,
অবেলায় কোনো এক রাত্রিতে ক্লান্ত আকাশের বুকে জোছনা গুনি না
ভেজা আকাশ, নক্ষত্রের রাত কিংবা আকাশ ফেঁড়ে চাঁদের আলো গায়ে মাখি না।
ধূসর বুকের গহীনে নিঃসঙ্গতার অবসাদ পৃথিবীর কারাগারে শঙ্খের মতন রুক্ষ,
আজ শিশিরের জলে মায়া নেই ;
পুষ্পে কোমলতা নেই, মায়াবতী নদী আজ ক্ষীণ!
দুঃস্বপ্নের যাতনার মতো একা গভীর বিবর্ণ সন্ধ্যা রাত আকাশ খুঁজে পরপারে,
হৃদয়ে আজ গভীর উৎসবের আয়োজন জমে না,
চারিদিকে ভয়ংকর নীরবতা;
সন্ধ্যার আকাশে মুখোমুখি বসিবার সময় নেই,
স্বাদহীন জীবনের আড়ালে কিছুকাল বেঁচে থাকি লাল-নীল স্বপ্ন নিয়ে।
যেদিন কুয়াশার মাঠে সমস্ত রাত নিখোঁজ ছিলাম;
ডানাভাঙা পাখির আর্তনাদে মিশে ছিলাম অবাধ নদীর ক্লান্ত স্রোতের কলরবে।
নিঃসঙ্গ আকাশ সরলতার ছবি আঁকে শিশিরের ফোটা দিয়ে
কোন এক কিশোরী মাটির বুকে;
যতদূরে চোখ যায় সবুজের স্তরে বহুকালের জমানো স্নিগ্ধতা খুঁজে পায় না।
খুঁজে পায় না ভাল লাগা কুয়াশার রাত, মহুয়ার গন্ধে ভরা প্রিয় শরীর;
মুখোমুখি বসিবার সন্ধ্যা রাত নিভৃতে জলে অমসৃণ আকাশ ফেলে-
সে আকাশ দেখিবার সময় মিলে কই !
জীবনের অপ্রিয় সময়ের ক্ষত দীর্ঘ হয়েছে ক্ষণেক্ষণে ;
সুসময়ে প্রিয় মুখ ছিলাম, প্রয়োজনে প্রিয় শরীর ছিলাম,
লালসার লঘু চোখে এক মুহূর্ত স্বস্তির আকাশ ছিলাম।
সবুজ বাদাড়, কালো মেঘ, ঘাসের বন , হৃদয় নিঙড়ানো কল্পনার জগত অন্ধকারে স্নান করে ;
তবেও হৃদয়ে প্রশান্তি জুটে না বহুদিন ।
জীবন তবুও আজ আনন্দের জোয়ারে উচ্ছ্বসিত হয় না,
উচ্ছ্বসিত হয় না মাঝরাতে পৃথিবীর পথে হেটে যাওয়া ধূসরিত কতকগুলো প্রাণ।
লেখক: শিক্ষার্থী, নাট্যকলা বিভাগ, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়।