মুহম্মদ আব্দুল্লাহ : যে দেশে পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যান উঠার খবর লীড/সেকেন্ড লীড রিপোর্টের মর্যাদা পায়, সে দেশে এক দিনে একই প্রকল্পের দুটি স্থানে ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙ্গে পড়া বড় কোন খবর নয়
এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুরমুখী বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভার অংশে এক দিনে দুটি ধ্বসের ঘটনায় দিনভর অনলাইন মিডিয়া ছিল নির্বিকার। মূলধারার অনলাইন ও শীর্ষ স্থানীয় দৈনিকের অনলাইনে নিউজটি ভুল তথ্যে হেলাফেলায় প্রকাশিত হয়েছে। এখানেও কি ডিজিটাল আইনের ভয়, না-কি উন্নয়নের ঢোল ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা?
অবশ্য এখন নিউজের সংজ্ঞা বদলেছে। মানুষ কুকুরকে কামাড়ালে সেটা খবর নয়, কুকুর মানুষকে কামড়ালেই কেবল খবর হয়!
জানা গেছে, আবদুল্লাহপুর পলওয়েল মার্কেটের সামনে শনিবার দিবাগত গভীর রাতে একটি গার্ডার ধ্বসে পড়ে। ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও এর প্রভাবে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে আজ সারাদিন ব্যস্ততম এ মহাসড়কের দুদিকে দীর্ঘ যানজটে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় হাজার হাজার মানুষকে।
আবার দিনে এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনের সামনে আরেকটি ধ্বসের ঘটনা ঘটে একই প্রকল্পের ফ্লাইওভারে। সেখানে দুই চীনা নাগরিকসহ চারজন আহত হওয়ার খবর কয়েক বাক্যে প্রচার পেয়েছে কোন কোন অনলাইনে। যদি ওই গার্ডার ধ্বসের সময় নিচে যাত্রীবাহী বাস থাকতো, তাহলে প্রাণহানির সংখ্যা কত হতো তা ভাবতেই হৃদয় কেঁপে উঠছে।
প্রতিদিন এ পথ ধরে যাতায়াত করার সময় চরম আতঙ্ক বোধ করি। উপর দিকে তাকিয়ে আল্লাহর নাম যপতে যপতে পার হই। চোখের সামনে ভাসে চট্টগ্রামে গার্ডার ধসে হতাহতের বিভীষিকা। আশঙ্কা সত্যি হলো। ব্যস্ত সড়কে ২০১৩ সাল থেকে আট বছর ধরে চলা কচ্ছপ গতির বিআরটি'র কাজে কতটা দায়িত্বহীনতা চলছে তা এ দুটি ধ্বসে প্রমান হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চলাচলকারীরা এই উন্নয়ন-তামাশা এনজয় করছেন সাত বছর ধরে!
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অনলাইনে ধ্বসের নিউজে এক্সপ্রেসওয়ে লেখা হয়েছে। এয়ারপোর্টের উত্তর দিকে কোথায় এক্সপ্রেসওয়ে? সাংবাদিকতায় এই দৈন্য আর কাটবে বলে মনে হয় না।
[নোটঃ প্রথম আলো, যুগান্তরসহ মুদ্রিত সংবাদপত্র অবশ্য যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। উন্নয়ন সাংবাদিকতায় অগ্রগামী বাংলাদেশ প্রতিদিন ও কালের কন্ঠ গুরুত্ব দিয়েছে কমই।]