ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম পুষ্পসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি ভ্রুণ হত্যার (ভ্রুণ নষ্ট) অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রব্বানী নামে এক ব্যক্তির স্ত্রীর ভ্রুণ হত্যার (ভ্রুণ নষ্ট) করার অভিযোগে ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত মামলাটি পর্যালোচনা করে হরিপুর থানা অফিসার ইনচার্জকে বাদীর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আসামীগণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।
আসামীরা হলো উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বকুয়া গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলামের ছেলে ও হরিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম পুষ্প, নন্দগাঁও (গনাগাছি) গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে আবুল কালাম (৪০) ও গজধুমডাঙ্গী গ্রামের তফিজউদ্দিনের ছেলে ফিরোজ (৩০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি মামলার বাদী রব্বানীর মা’সহ তার স্ত্রী দিলারা বাড়ির পাশে সাংসারিক কাজে গরুÑছাগল আনতে গেলে পূর্ব শত্রুতার কারণে আসামী আবুল কালাম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধমকাইতে থাকেন । দিলারা আসামীগণের অনাকাঙ্খিত অশোভন আচরণ ও গালিগালাজের প্রতিবাদ করলে আসামী হরিপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম পুষ্প গাড়ি থেকে নেমে এসে দিলারার তলপেটে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়।
এ সময় দিলারা ৬ মাসের অন্তঃস্বত্বা আছে বলে চিৎকার করলে আসামী কালা, ও ফিরোজ চড় থাপ্পর মারতে থাকে ও শ্লীলতাহানী ঘটায়। এসময় দিলারা প্রাণে বাচার জন্য চিৎকার দিলে আসমী পুস্প দিলারার তলপেটে মটরসাইকেলের সামনের চাকা উঠানোর চেষ্টা করেন। দিলারার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে দিলারাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে আসে।
পরেরদিন সকালে দিলারার তলপেটের ব্যাথা বেড়ে গেলে হরিপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার দেখার পরামর্শ দেন। পরে দিলারাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এক্সরে ও আল্টাস্নোগ্রাম করা হলে জানা যায় দিলারার পেটের বাচ্চা (ভ্রুণ) নষ্ট হয়ে গেছে। পরে কর্তব্যরত ডাক্তার দিলারার পেট থেকে নষ্ট ভ্রুণ বের করে।
মামলার বাদী রব্বানী বলেন, আমার স্ত্রী দিলারা চিকিৎসা শেষে হরিপুর থানায় মামলা করতে গেলে আসামীগণ প্রভাবশালী হওয়ার কারণে পুলিশ মামলা গ্রহণ করে নাই। পরবর্তীতে ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-সিআর ৪৪/২০২১ (হরিপুর)।
হরিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম পুষ্পের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মামলার বিয়ষটি মিথ্যা বানোয়াট বলে দাবি করেন।
হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম মামলা রুজু করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং তিনি বলেন ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে নির্দেশক্রমে দিলারা নামে এক গৃহবধুকে মারপিট, শ্লীলতাহানী ও গর্ভপাত করানোর মাধ্যমে শিশুর ভুমিষ্ঠ হওয়ার বাধাদানের অপরাধে ৩ জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/আরইউ