মাহবুবুল হক খান, দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালের ৮ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১৮ জন ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কম থাকায় মেঝেতে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন ভর্তি হওয়া রোগীরা।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড নেই। অপরদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট দিনাজপুর জেনারেল হাসাপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে মাত্র ৮টি। কিন্তু ৮ শয্যার এই ওয়ার্ডে সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৪৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এসব রোগির মধ্যে শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ রয়েছেন। হাসপাতালে শয্যার সংকুলান না হওয়ায় এসব রোগীকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সোমবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৫টায় সরেজমিন দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের নীচতলায় অবস্থিত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে, ওয়ার্ডের বারান্দায় ও হাসপাতালের করিডোরের মেঝেতে রোগীরা গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদেরকে এসব রোগিকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর সুকদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন (৭৬) ১৪ মার্চ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সোমবার সকালে ভর্তি হয়েছেন সদর উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সলিলেশ^র বসাক (৫০)। তারা দু’জন জানান, হঠাৎ করে পেটের ব্যথা ও পাতলা পায়খানা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভর্তির পর তাদের দু’জনের অবস্থাই অনেকটা ভাল বলে জানান। হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় সবধরনের ওষুধপত্র দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে তাদের তেমন কোন ওষুধ কিনতে হয়নি।
এদিকে হাসপাতালে কর্তব্যরত একজন নার্স জানান, ১৫ মার্চ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নতুন ১৮ জন ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হয়েছেন। যা এযাবত কালের সবচেয়ে বেশী ডায়রিয়া রোগি। ফলে সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট রোগির সংখ্যা দাড়ায় ৪৪ জন। এছাড়া ১৪ মার্চ রবিবার নতুন রোগি ভর্তি হয় ১৪ জন ও ১৩ মার্চ শনিবার নতুন রোগি ভর্তি হয় ১০ জন।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ জানান, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং অনেক এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, রাস্তা-ঘাটের খোলা খাবার খাওয়ার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। তিনি জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় প্রতি বছরই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। আর এতে বেশীরভাগ সময় শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তিনি পুকুরের পানি ব্যবহার না করা ও রাস্তাÑঘাটের খোলা খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি পানি ব্যবহারে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ।
সময় জার্নাল/ইম