শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

পল্টুর দুর্নীতি তদন্তের নামে সময় ক্ষেপণ! ক্ষুদ্ধ বন্দরের কর্মচারীরা

শনিবার, অক্টোবর ২, ২০২১
পল্টুর দুর্নীতি তদন্তের নামে সময় ক্ষেপণ! ক্ষুদ্ধ বন্দরের কর্মচারীরা

এম পলাশ শরীফ, বাগেরহাট প্রতিনিধি: প্রভাব খাটিয়ে এবং বন্দরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আগের সকল অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তে সময় ক্ষেপণ করে আবারও মোংলা বন্দর কর্মচারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী খুরশিদ আলম পল্টু। নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে এক সময় ডুবে থাকা সিবিএর সাবেক ওই নেতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম ক্ষুব্দ বন্দরের কর্মচারীরা। তারা বলছেন, দুর্নীতিবাজ কেউ সিবিএ”র নেতা হলে বন্দর উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে।

অভিযুক্ত কাজী খুরশিদ আলম পল্টু মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের প্রভাপশালী এক সাবেক নেতা। তিনি চাকুরীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটি না নিয়ে গত ২০১২ সালে ১৯ অক্টোবর থেকে ২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইতালিতে অবস্থান করেন। সেখানে ১২৪ দিন থাকার পর দেশে ফিরে বিদেশে অবস্থানের বিষয়টি গোপন করে অসুস্থতার ভুয়া মেডিকেল সনদপত্র দেখিয়ে আবার চাকরিতে  ফিরেন এবং একই সাথে বিদেশে থাকা চার মাসেরও অধিক সময়ের বেতন ভাতাও উত্তোলন করেন তিনি। এ নিয়ে বন্দর এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের দাবি উঠে। এরপরই তিনি(পল্টু) মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের (সিবিএ) নেতা বনে যান। নির্বাচিত হন সাধারণ সম্পাদক। নেতৃত্বের প্রভাব খাটিয়ে ওই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন তিনি। এর পর শুরু করেন বন্দরের কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য। আর ওই নিয়োগ বানিজ্যে বাধা সৃষ্টি করায় তৎকালীন বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর এম ফারুক হাসানের সাথে খুলনা নেভী স্কুলে নিয়োগ পরিক্ষার সময় অস্যেজন্য মউলক আচরণ করেন। এবং বন্দর চেয়ারম্যান এম ফারুক হাসানের গাড়ীর গতিরোধকরে গাড়ীর চাবি নিয়ে যান। 

এই পল্টু একই সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির । এমনসব ঘটনায় ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর কাজী খুরশিদ আলম পল্টুর দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে ঘটনার সত্যতাসহ প্রমাণও মেলে।এর পর তদন্ত কমিটি কাজী  খুরশিদ আলম পল্টুকে পলায়নের দায়ে দোষী সাব্যস্থ করে তৎকালীন চেয়ারম্যান রিয়ার  এডমিরাল মো: শাহজাহান বরাবরে অফিস আদেশের প্রেক্ষিতে গত ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয়। বন্দর কর্মচারীদের অভিযোগ অদৃশ্য কারণে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি পল্টুর বিরুদ্ধে।

বন্দর কতৃপক্ষের নৌ-শাখায় কর্মরত ২য় শ্রেণীর ড্রাইভার মোঃ ইলিয়াস মিয়া বলেন, বন্দরের কর্মচারীদের এক সময় জিম্মি করে বহু টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক পল্টু। তিনি জানান, ২০১৯ সালে বন্দরের বেতার শাখায়  মেধা তালিকায় নিয়োগ পাওয়া মোঃ সোহাগের কাছ থেকে জিম্মি করে তিনি ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মাসোহারা না দিলে অধিকাংশ কর্মচারীকে এক দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরে বদলী করে হয়রানী করেছেন তিনি। 

এদিকে চলতি মাসে আবারো সিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর ওই নির্বাচনে কাজী খুরশিদ আলম পল্টু সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন এমন খবরে ক্ষুব্দ কর্মচারীরা। কর্মচারীদের  অভিযোগ বন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দুর্নীতির সাজা নানা অজুহাতে বিলম্বিত করে আবারও প্রার্থী হওয়ায় সুযোগ নিচ্ছেন পল্টু। 

তবে অভিযুক্ত কাজী খুরশিদ আলম পল্টু নিজেকে নির্দোশ দাবি করলেও মোংলা বন্দর  কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ শাহীনুর আলম জানান, তদন্ত কমিটি কাজী খুরশিদ আলমের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। বিষয়টি আইনি ব্যবস্থা নিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট শোভন সরকারের উপর দায়িত্ব  দেয়া হয়েছে। 

তবে অভিযোগগুলো বিচারাধীন থাকায় এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শোভন সরকার। 

যদিও বন্দরের কর্মচারী নিয়োগের প্রভিধানমালা মোতাবেক কেন নির্দিষ্ট সময়ে (১৫ কার্যদিবস) ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে  তিনি দাবি করেন, নিদিষ্ট কোন সময় দেয়া নেই প্রভিধানমালায়। 

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল