সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি রক্ত নিয়ে গবেষণায় অধিক গুরুত্ব দিতে বললেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। সেইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধমূলক গবেষণাতেও:গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। রোববার (১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। দিবসটিকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সম্মাননা প্রদান, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর নিবেদন করে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আজকের বাংলাদেশকে পেয়েছি। জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ৮ই অক্টোবর তৎকালীন আইপিজিএমআর এর এ ব্লকের দোতলায় “কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র’’টির শুভ উদ্বোধন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে চির কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছেন। জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, সেবার সাথে সাথে গবেষণাকে আরো এগিয়ে নিতে হবে। রক্ত সংগ্রহ, স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার সাথে সাথে রক্ত নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায়ও গুরুত্ব দিতে হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিজ নিজ গ্রাম ও এলাকায় সপ্তাহে অথবা মাসে এক দু’বার গ্রামে গিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি। এতে করে গ্রামের সাধারণ মানুষ, সাধারণ রোগীরা অনেক বেশি উপকৃত হবেন।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন দুদিন পর অর্থাৎ ১০ জানুয়ারী। দীর্ঘ কারাভোগের পর শারীরিক ভাবে ছিলেন ক্লান্ত এবং কিছুটা অসুস্থ। তৎকালীন আইপিজিএমআর এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিলেন। সে কারণে স্বদেশে আসার পরও তিনি বেশ কিছুদিন সভাসমাবেশ থেকে দূরে ছিলেন। এরপর তিনি প্রথম যে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন সেটা হলো ১৯৭২ সালের ৮ই অক্টোবর তৎকালীন আইপিজিএমআর এর এ ব্লকের দোতলায় “কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র’’টির উদ্বোধন। বর্তমানে যেটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ নামে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রটি অর্থাৎ বর্তমানের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগটি নিয়ে এই জন্য আমরা সকলে গর্বিত। ১৯৭২ সালের “এ” ব্লকের ২য় তলার জায়গা নিয়ে “কেন্দ্রীয় রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র”টি শুরু হয়েছিল, যা নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন মোতাবেক চলছে যুগের চাহিদা মোতাবেক। বিভাগটি জরুরি বিধায় শুরু থেকেই বিভাগটির কার্যক্রম দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলমান ছিল এবং যা এখনো চলমান। বিশ্ব করোনা মহামারীর মধ্যেও বিভাগটির কোনো কার্যক্রম এক মিনিটের জন্যও বন্ধ হয় নাই। রোগীর প্রতি দায়িত্ববোধ এবং সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকেইে বিভাগের সকল শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা করোনা মহামারীর মধ্যেও দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে।
স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য যাঁরা সম্মাননা পেয়েছেন : ডা. তানভীর আহমেদ, ডা. খান আনিসুর ইসলাম, মোঃ শাহিনুর রহমান, মোঃ শাকিল আহমেদ, মোস্তারিফ মুরসালিন, মোঃ শফিকুল ইসলাম ও মোঃ লোকমান মিয়া।
ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. শেখ মোঃ সাইফুল ইসলাম শাহীনের সঞ্চালনায় মহতী এই অনুষ্ঠানে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন প্রমুখসহ উক্ত বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/ইএইচ