নিজস্ব প্রতিবেদক।সময় জার্নাল : একুশে পদক প্রাপ্ত দেশবরেণ্য অভিনেতা ও শিক্ষক ড. ইনামুল হকের (৭৮) মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে ফেনী সাংবাদিক ফোরাম (এফএসএফডি)।
এক শোকবার্তায় সংগঠনের সভাপতি তানভীর আলাদিন ও ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া ফেনীর এই কৃতি সন্তানের রুহের মা্গফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদরের মটবীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। ড. ইনামুল হকের দাম্পত্য সঙ্গী নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক ।
ইনামুল হক একজন প্রখ্যাত অভিনেতা, লেখক, নাট্যকার ও শিক্ষক। তিনি দীর্ঘকাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে তিনি অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেনন ড. ইনামুল হক।
তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্রে, বিশেষ ম্যাগাজিনে এবং বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ইনামুল হক-এর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী, মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র, স্ট্রিন্ডবার্গ এর দু'টো নাটক, মহাকালের ঘোর সওয়ার, বাংলা আমার বাংলা ইত্যাদি।
ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ড. ইনামুল হক। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’ নাটকে। এরপর এই দলের হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরো বহু নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি এই দল থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। দলটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন গুণী এই নাট্যজন।
তিনি একুশে পদক (২০১২), টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পুরস্কার আজীবন সম্মাননা (২০১২) ও স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৭) লাভ করেন।
ড. ইনামুল হক সোমবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর।
সময় জার্নাল/আরইউ