সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
সমগ্র বিশ্বে প্রায় ২২.৭% ( ৫৪.৪ মিলিয়ন) প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ আর্থ্রাইটিস বা বাত রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে ২৩.৫% পুরুষ এবং ১৮.১ % মহিলা। বাত রোগ অন্য সাধারণ রোগের মত শুধু ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করে এর ভয়াবহতা এড়ানো সম্ভব নয়। এটা শুধু শারীরিকভাবেই পঙ্গুত্ব তৈরি করে না বরং মানসিকভাবে ও সামাজিকভাবেও রোগীকে হীনমন্যতায় ফেলে দেয়। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রিউমাটোলজি বিভাগ ও ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
‘আর নয় দেরি সম্পৃক্ত হই আজই,- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগ ও ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস উদযাপন করে।
দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে রিউমাটোলজি বিভাগ কর্তৃক এ ব্লক অডিটোরিয়াম ও ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের উদ্যোগে একটি র্যালি ও শহীদ ডা. মিলন হলে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উভয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ ।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মানুষের শরীরে জয়েন্টে ব্যাথা এখন সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হচ্ছে। এটি একটি ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা থেকে পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ অসুস্থ থাকায় অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিশাল ক্ষতির কারণ হচ্ছে। এসব বিষয়ে চিকিৎসা ও গবেষণা বাড়ানোর আশ্বাস দেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সাইন্স এন্ড হসপিটাল এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ।
সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মিনহাজ রহিম চৌধুরী ও ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ এ কে এম সালেক পরিচালনা করেন অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু শাহীন, মডারেটর সহকারী অধ্যাপক ডা.আবুল খায়ের আহমেদুল্লাহ ।
উল্লেখ্য, বাত রোগের ভয়াবহতা মোকাবেলার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে বাতরোগ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা, পূনর্বাসন ও জীবন যাত্রার সাথে অভিযোজনের জন্য সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মশিউর রহমান খসরু এর তত্ত্বাবধানে রিউম্যাটোলজি রিহ্যাবিলিটেশন ক্লিনিক পরিচালনা করা হয়, যেখানে প্রতি মঙ্গলবার সকাল ৯:০০ টা হতে দুপুর ১২:০০ টা পর্যন্ত বিনামূল্যে বাতরোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এই ক্লিনিকে এখন প্রতিবছর ১ হাজারের মত রোগীকে চিকিৎসাসহ জীবনযাত্রার পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষাদান করা হয় এবং এ পর্যন্ত ৩০০০ জন রোগীকে সেবাদান করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এই ক্লিনিক থেকে এখন পর্যন্ত ৬ টি গবেষণা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং আরো ৬ টি চলমান আছে।
বাত রোগের চিকিৎসা ও জটিলতা সম্বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বছর ১২ই অক্টোবর, (ডড়ৎষফ অৎঃযৎরঃরং উধু) বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে বাত রোগীদের চিকিৎসা ও পূনর্বাসন এর মাধ্যমে পঙ্গুত্ব প্রতিরোধে ও জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের রিউম্যাটোলজি রিহ্যাবিলিটেশন ক্লিনিক (ডড়ৎষফ অৎঃযৎরঃরং উধু) উদযাপিত হয়। বিশ্ব আর্থ্রাইটিকস দিবস উপলক্ষে বাতরোগের চিকিৎসা বিষয়ক গাইড বই- এর মোড়ক উম্মোচন করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। এসময় রিউমাটোলজি বিভাগের ও ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সম্মানিত শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা,কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/ইএইচ