শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শেখ ফাহমিদা নাজনীন এর কবিতা ‘নদীপাড়ের উপাখ্যান’

বুধবার, অক্টোবর ১৩, ২০২১
শেখ ফাহমিদা নাজনীন এর কবিতা ‘নদীপাড়ের উপাখ্যান’

..............

নদীটার বুক জুড়ে উপচানো স্রোতোধারা ছোট ছোট ঢেউয়ে ছিল ছন্দ, 
নদীর স্রোতের সাথে মেঘের মিতালী ছিল বাতাস বইতো মৃদুমন্দ। 

নদীটার গায়ে ছিল নীল রঙা নীলাচল ঝিলিমিলি আলো ছায়া ফেলছে, 
রাতের আকাশ হতে হাজার তারার বাতি তারই আরশিতে কথা বলছে। 

নদী যেন নদী নয়, রঙে, রূপে একাকার ভরা বর্ষায় রূপ ফুটলো,
ভোরের আযান শুনে ওজুর সজ্জা হতে তক্ষুনি ঘুম ভেঙে উঠলো। 

দুই কূলে ছিল তার শান্তির আবাসন, ভাইয়ে ভাইয়ে ছিল কি যে সন্ধি, 
অর্থ ছিল না তবু প্রাণে প্রাণে সুখ ছিল দুপাড়ের জনপদে বন্দী। 

মসজিদ, মন্দির, মঠ কিবা গির্জা দুই পারে ছিল ভারী শান্ত, 
যে যার নিজের মতো স্রষ্টার উপাসনা ব্যাস্ত থাকতো অক্লান্ত। 

দ্বন্ধ ছিল না, ছিল মানবিক সহায়তা এই নদী সে সবের সাক্ষী, 
হঠাৎ যে কারা এলো বিদ্বেষ ছড়িয়ে তারা নাকি প্রগতির রক্ষী!

রাত্রের আঁধারে মূর্তিটা ভাঙলো, মসজিদে এলো তার প্রতিশোধ, 
প্রতিবেশী জ্বলে ছাই হিংসার আগুনে ঘরে ঘরে মমতার অবরোধ। 

দ্বন্দ্বের টানে এলো প্রশাসন, কুশাষণ আরও এলো ছিল যার স্বার্থ, 
মামলা - মকদ্দমা, জেল - জরিমানা হলো শান্তি কেবলই হলো ব্যার্থ।

দুপারের আদিবাসী ছেলে বুড়ো যারা ছিল বুক জুড়ে যন্ত্রণা - হাহাকার, 
হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ বা খৃষ্টান সবার কান্না মিশে একাকার। 

কতো যে অবোধ ব্যাথা, কতো দীর্ঘশ্বাস নদীটা রয়েছে তার সাক্ষী, 
আরও মনে রেখেছে দুপাড়ের মাটি, হাওয়া, গাছ - গাছালি, পশু - পক্ষী।

বারে বারে ছুটে আসে ভিনদেশী হাতিয়ার শান্তি মুখোশ করে ব্যাবহার,
পুঁতে দিয়ে যায় চীর অশান্তি বৃক্ষ ছড়িয়ে পড়ে ঘোর অনাচার। 

আযান হারায় সুর, মন্দিরে কোলাহল, লোকালয়ে বিষাদের কাহিনী, 
গাঁয়ের লোকেরা ভাবে এসব কি শুরু হলো আগে তো কখনও এটা শুনিনি? 

পুরানোরা চলে যায়, তার সাথে চলে যায় শ্রদ্ধা, মমতা, মায়া, মানবিক, 
দুই পারে বেড়ে ওঠা নতুন শিশুরা বোঝে দ্বন্দ্বেই বেঁচে থাকা স্বাভাবিক। 

এভাবেই ধীরে ধীরে সভ্যতা মুছে যায়, ঐতিহ্য হয় ধ্বংস, 
নদীর দুকূল জুড়ে নতুন প্রজন্ম হয়ে যায় অপরাধী বংশ। 

নদীটায় জানে কি যে লজ্জা! কি অপমান! বয়ে চলে অবিরত বুকে তার, 
আজও সে সপ্ন দেখে শুদ্ধ করবে তাকে আসবে নতুন কোনো কারিগর। 

শেখ ফাহমিদা নাজনীন 
১১ অক্টোবর ২০২১।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল