নিজস্ব প্রতিেবদক: দেশের বর্তমান সহিংসতা, দুর্নীতি রোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে যে সকল সমস্যা তৈরী হয়েছে তা একমাত্র সমাধান করতে পারে একটি জাতীয় সরকার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে দিতে জাতীয় সরকারের বিকল্প নাই।
বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত পরিবারের ঘর বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজকে আগুনের যে লেলিহান শিখা এখানে দেখছি আমার মনে হয় ১৯৭১ সালেও এ ধরনের ঘটনা দেখি নাই। আজকে এ ধরনের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতা। তা না হলে কুমিল্লার ঘটনার পর আর একটা ঘটনাও ঘটার কথা ছিল না।
তিনি বলেন, দু'এক জন পাগল একটা দেশে থাকতে পারে। তারা কিছু মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে পুরো জাতিকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের এই সংগঠক বলেন, আমি শুধু সরকারকে বলছি না। সরকারী দল, বিরোধী দল আপনারা সবাই যদি কুমিল্লার ঘটনার পর সেদিন সেখানে যেতেন তবে আজকে এই ঘটনাগুলো ঘটতো না, সাহস পেত না।
তিনি বলেন, মাঝি পাড়া যেখানে দরিদ্র জেলেরা থাকে সেখানে হামলা করা হচ্ছে। আমরা অর্থহীন লেখাপড়া করেছি। আমাদের বুঝা উচিৎ ছিল এরাই আমাদের সবচাইতে আপনজন। আমি জানি না কার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইব, কার কাছে দুঃখ প্রকাশ করব। আমি এতটুকো বলতে চাই আমরা তাদের হৃদয়ের বেদনাতো মুছে দিতে পারব না তবে আগামী এক মাস তাদের খাবার ব্যবস্থা করব। আর জেলেদের অন্যান্য জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে সেটারও কি করা যায় আমরা দেখব।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলবো আপনি পুরোহিত, আলেম সবাইকে নিয়ে এখানে আসেন। আপনি যদি আসেন তবে আর এ ধরণের ঘটনা ঘটবে না। শুধু বললে চলবে না আমরা বিচার করব। কোথায় বিচার হয়েছে? আজকে গাইবান্ধায় মেয়েদের ফুটবল খেলতে দেয়নি, আহমেদিয়াদের মিটিং করতে দেয়নি। কোথাও কোনো বিচার হয়নি। তাই এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে দায়িত্ববান হতে হবে। বাকি যারা বিরোধীদল আছে তাদেরও দায়িত্ববান হতে হবে। তাদেরও এখানে আসতে হবে।
এ সময় তিনি পীরগঞ্জ বড় করিমপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির ও তার পাশে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ননা শোনেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারী পক্ষ'র সদস্য শিরিন হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ,গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর , রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ৬৯‘ গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নুরুজ্জামান, রংপুর জেলা গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান প্রমূখ।
সময় জার্নাল/এলআর