আব্দুর রব, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: সম্প্রতি সার্বজনীন দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে ও তৎপরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন- নির্যাতনের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ২১ অক্টোবর) প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. বলরাম রায় ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. হারুন উর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবাদ লিপিতে যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. বলরাম ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. হারুন উর রশীদ বলেন, "বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বন্ধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আবহমান কাল হতে এদেশে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীও ধর্মমতের অনুসারীরা মিলেমিশে সৌহার্দপূর্ণ ভাবে বসবাসের মাধ্যমে সম্প্রদায়গত ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় রেখে চলছে। এটা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ন্যাক্কারজনকভাবে নিরপরাধ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন মন্দিরে, পূজামন্ডপ, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ লুটপাট এবং মা বোনদের শ্লীলতাহানিসহ জঘন্য ঘটনা ঘটে যা অত্যন্ত দুঃখ জনক ও নিন্দনীয়। অতিসম্প্রতি রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়ায় রাতের অন্ধকারে অগ্নিসংযোগ করে নির্মমভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হলো বসতবাড়ি। পুড়ে ছাই হলো জীবন্ত গবাদিপশু, লুটতরাজ করা হলো টাকা এবং আসবাবপত্র।
তারা আরো বলেন, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম এ ধরনের সকল সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য বারবার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে সব ধর্মের মানুষের মানবিক অধিকার নিশ্চিত করা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। যেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি আদিবাসী সবাই মিলেমিশে সৌহার্দপূর্ণ বন্ধনে একসঙ্গে থাকা।
আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি, এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী স্বাধীনতা বিরোধী একাত্তরের পরাজিত শক্তি মাঝে মাঝে হাজার বছরের সম্প্রতির বন্ধন নষ্ট করছে। রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আঘাত করছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে। তাই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সমস্যার গভীরে গিয়ে উগ্র এবং ধর্মান্ধ আচরণকে প্রশ্রয় না দিয়ে প্রকৃত সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য আমরা গভীরভাবে বর্তমান সরকারের কাছে জোড় দাবি জানাচ্ছি।
এমআই