সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
শুক্রবার বেলা ১১ টার কিছু সময় পর বিএনপির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমেদ এর লাশ আনা হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে। এসময় সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার দলীয় নেতা-কর্মী ও ভক্ত-অনুরাগী।
জানাজার আগমুহূর্তে দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আমাদের একজন অভিভাবক ছিলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও আমাদের দল শূন্যতা অনুভব করছি। আজকে আপনারা সবাই দেখছেন এই বরেণ্য ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষ এসেছেন। তারা শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে দোয়া করব— তিনি যেন তার সব গুনাহ মাফ করে দিয়ে তাকে বেহেশত নসিব করেন।
শোকাহত মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমাদের অন্যতম জাতীয় নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জানাজায় শরিক হয়েছি। যিনি ছাত্রজীবন থেকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। আজ তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি শুধু রাজনীতিক ছিলেন না, রাজনীতিক কিংবদন্তি ছিলেন। তিনি অনেক পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি পরিবর্তনেই তার মূল লক্ষ্য ছিল একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি নিজেকে রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী হয়েছেন। প্রায় ৮১ বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তার এই চলে যাওয়া শুধু বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল।
মির্জা ফখরুল বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এ সময় কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নানা স্তরের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত : সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মারা যান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সেখানে প্রবাসীদের অংশগ্রহণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর লাশ বিমানযোগে ঢাকায় এনে এভারকেয়ার হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানাতে মওদুদ আহমদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। ১০ টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মওদুদ আহমদের মরদেহ নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সুপ্রিমকোর্টে প্রাঙ্গণে। সেখান থেকে লাশ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে জানাজা শেষে লাশ নেওয়া হয়েছে নিজ জেলা নোয়াখালীতে। বাদ আসর জেলার বসুরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে।
সময় জার্নাল/ইএইচ