কি অসহায়! চলে গেল সে,
মেঘের আড়ালে ঢাকা চাঁদ যেন।
আঁধারের লোকালয় পেছনে ফেলে,
আঁধারের পথ ছেড়ে অন্য এক আলোকিত উদ্যানে।
পেছনে পড়ে আছে নিকষ কালোয় ডোবা ধু ধু প্রান্তর,
সেই মাঠ, সে পাহাড়, খেজুরের বন
যেখানে কেটেছে তাঁর শৈশব, কৈশোর, উদ্দীপ্ত যৌবন,
যেখানে ঘুমিয়ে আছে পিতা, পিতামহ, মাতা, প্রিয়তম পত্নী।
থমকে দাঁড়ালো সে ফিরে তাকালো,
শেষবার, বিদায় হে স্বদেশ আমার,
প্রাণের জন্মভূমি কত আপনার
আমিতো তোমাকে ছেড়ে যেতে চাইনি!
মন থেকে কক্ষনও দূরে যাইনি,
তবু তোমার বাসিন্দারা তাড়ালো আমায়
যত প্রেম, মমতা হৃদয়ে জমা সব নিয়ে চলি তাই দূর পরবাসে।
দুচোখের কোণে তাঁর দুই ফোটা ব্যাথা,
ভাঙছে পাজর যেন টুকরো টুকরো,
নাড়ী ছেঁড়বার কি যে নিদারুণ জ্বালা
প্রভুর আদেশে সবই সয়ে গেল সে।
ছেড়ে গেল জমজম, উকাযের মাঠ,
মহান পিতার গড়া আল্লাহর ঘর।
রয়ে গেল খাদিজার শূন্য উঠোন,
রয়ে গেল বড় প্রিয় চাচার কবর।
চলে গেল আলোকিত নক্ষত্র,
গাঢ় অমানিশায় যে সূর্য ছিল,
চলে গেল মক্কার চীর গৌরব
নতুন আকাশ জুড়ে সূর্য হতে।
ইয়াসরিবের প্রাণে প্রাণ ফিরে এলো,
গৌরবে উজ্জ্বল ঘর, সংসার,
প্রতিটা প্রাণের মাঝে ঈমানের তেজ,
মাথা তুলে দাঁড়ালো দুর্ভাগা জাতি।
সৃষ্টি হলো এক নতুন ইতিহাস বিশ্বজয়ীদের উপাখ্যান,
সৃষ্টি হলো এক দুর্জয় জাতি যাদের রক্তে নাচে জয়ের তুফান।
যতবার এ জাতির রক্ত গড়ায় ততবার লেখা হয় জয়ের ইতিহাস,
যতবার বিতাড়িত মুহাম্মাদ ততবার গড়ে ওঠে নতুন শহর,
ঈমানের আলোয় ভরা নতুন শহর।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৩ নভেম্বর ২০২১।