নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকৃতিতে এখন শীতের আগমনী বার্তা। এর মধ্যে বাজাের আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এবার রূপবান শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল এলাকায় তাই কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
সীতাকুণ্ডে আগাম শিমটির নাম ‘রূপবান’। শিমটির রং বেগুনি। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে এ শিম লাগানো হয়ে বলে একে গ্রীষ্মকালীন শিমও বলা হয়।
থোকায় থোকায় ঝুলে আছে শিম। আবার কোথাও ফুলে ফুলে ভরে গেছে শিমগাছ। দাম বেশি, তাই আগেভাগেই খেত থেকে শিম তুলছেন কৃষকেরা। ভালো লাভে আগাম শিম বিক্রি করতে পেরে এ গ্রামের আজাদ হোসেনের মতো অন্য কৃষকেরা আনন্দিত।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, বাজারে প্রতি কেজি শিম ১০০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই বীজ আসার আগেই তাঁরা শিম তুলে বিক্রি করছেন। ফলন উঠতে শুরু করার এক মাসের মাথায় খরচের সমপরিমাণ লাভ করেছেন কৃষকেরা।এখন যা বিক্রি হচ্ছে, তার পুরোটাই লাভ। শিম বিক্রি করে লাভের মুখ দেখে স্বস্তিতে কৃষক।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, শিম শীতকালীন সবজি। সীতাকুণ্ড লইট্টা, বাঁটা ও ছুরি জাতের শিম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। শীতে মাঠজুড়ে শিমের চাষ করা হয়। এমনকি জমির আলেও শিম চাষ হয়। কিন্তু রূপবান শিম লাগানো হয় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। শ্রাবণ মাস থেকে ফলন শুরু হয়। লাভ বেশি হওয়ায় রূপবান শিমের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় এবার ২৫ হেক্টর জমিতে রূপবান, ইপসা-১ ও ইপসা-২ জাতের শিমের আবাদ হয়েছে। এর বেশির ভাগ চাষ হয়েছে বারৈয়ারঢালা ও সৈয়দপুর ইউনিয়নে। শুধু বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল ব্লকে চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে।
সরেজমিন টেরিয়াইল এলাকায় দেখা যায়, কৃষকেরা শিমখেতের পরিচর্যা করছেন। আবার কেউ কেউ বাজারে নেয়ার জন্য শিম তুলছেন। কৃষক মানিক হোসেন বলেন, ৪০ শতক জমিতে তিনি আগাম শিমের চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছিল ১৫ হাজার টাকা। গতকাল পর্যন্ত তিনি বিক্রি করেছেন ৪৫ হাজার টাকার। এখনো পুরো মৌসুম বাকি।
কৃষক আজাদ হোসেন বলেন, সপ্তাহে দুই দিন শিম তুলে বাজারজাত করতে পারেন তাঁরা। রূপবান শিম একবার লাগালে এক বছর ধরে ফলন পাওয়া যায়। তবে শীতের সময় অন্যান্য শিম বাজারে এলে তখন রূপবানের দাম একেবারে কমে যায়। তখন তাঁরা শিম না তুলে বিচি সংগ্রহ করেন।
ওই ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ব্লকে রূপবান শিমের বেশি আবাদ হয়। এবার ১০ হেক্টর জমিতে এই শিম আবাদ করেছেন ১০০ জন কৃষক। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা খুশি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, প্রতি হেক্টরে ছয় মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা তাঁদের। কিন্তু অন্যান্য শিমের তুলনায় রূপবান শিম উৎপাদন কিছুটা কম হলেও দাম বেশি হওয়ায় কোনো কৃষককে লোকসান গুনতে হয় না। এ শিম সারা বছর চাষ করা যায়।
সময় জার্নাল/এলআর