নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হলে শিল্প খাতে নতুন সম্ভাবনা যেমন তৈরি হবে, তেমনি চ্যালেঞ্জও তৈরি হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা ও প্রযুক্তিনির্ভর বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসতে উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৯ প্রদান উপলক্ষে পাঠানো ভিডিওবার্তায় এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শ্রমিকের শ্রম ও দক্ষতাকে অপরিহার্য বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘এ জন্য মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, উদ্যোক্তাগণ শ্রমিকের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ২০২৬ সালে চূড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, ইনশাল্লাহ। তখন অন্যান্য সেক্টরের মতো শিল্প খাতের জন্য যেমন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে, আবার বেশকিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনে বাংলাদেশের শিল্পায়নের ধারা এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার বিগত এক যুগে বাংলাদেশে শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
সরকারের একার পক্ষে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান করা সম্ভব নয় জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ।’
১০০টি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।’
ইকোনোমিক জোনের বড় অংশ বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘ইকোনোমিক জোনে শিল্প স্থাপন করা হলে কর রেয়াতসহ প্রদেয় বিভিন্ন প্রণোদনা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সমভাবে ভোগ করবেন।’
রাষ্ট্রপতি জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়ে বিশ্বজুড়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তাই দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
এবার শিল্প খাতে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯ প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৯। এর মধ্যে বৃহৎ শিল্প ও মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে রয়েছে চারটি করে প্রতিষ্ঠান। তিনটি করে প্রতিষ্ঠান রয়েছে ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প ও হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে। আর দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে।
রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার বিজয়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুরস্কার প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেল। গুণগত শিল্পায়নের নতুন ধারা এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে আপনারা হবেন অন্যদের জন্য পথিকৃৎ। আপনাদের অনুসরণ করে দেশে আরো দক্ষ ও তরুণ শিল্পোদ্যোক্তা তৈরি হবে।’
সময় জার্নাল/এলআর