দেবা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়িতে বিনা বাঁধায় হাজার হাজার রাবার গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রাম লিডার ও অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব উৎপাদনশীল রাবার গাছ প্রতিদিনই কাটা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপকারভোগীরা। সংস্থার খাগড়াছড়ি সদরের ১৩ নং আলাধন পাড়া ব্লকের খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের দু’পাশে সৃজিত বাগানের গাছ দিনের পর দিন কেটে সাবাড় করা হলেও দেখার কেউ নেই। এভাবে প্রায় প্রত্যেক এলাকার গাছ সাবাড় হচ্ছে এবং অসহায় উপকারভোগীদের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট রাবার বাগান ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার পিন্টু চাকমা বলেন, ‘‘গাছ কাটার বিষয়ে শুনেছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির জানান, ‘‘উন্নয়ন বোর্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে খাঁড়া গাছ মার্কিং করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কাটার অনুমতি আমরা (বন বিভাগ) দিইনি। শুনেছি উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি টেন্ডার/ নিলামের মাধ্যমে রাবার গাছগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রেও কাঠগুলো পরিবহনের জন্য বন বিভাগের অনুমতি লাগবে। তবে এখনো আমরা পরিবহনের জন্য অনুমতির (টিপি) কোন আবেদন পাইনি।’’
জানা যায়, সংস্থাটির একযোগে অবসর যাওয়া ৩৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গত ৫ বছরেও কানাকড়ি পরিশোধ করতে না পারায় তাদের পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে বাগানের এসব গাছ বিক্রয়ের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। এজন্য বন বিভাগের প্রয়োজনীয় অনুমোদনের কাজ চলছে। এরমধ্যে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী কাগজপত্র জাল জালিয়াতি করে নিকটবর্তী মিলগুলোতে হাজার হাজার গাছ অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ‘উঁচুভূমি বন্দোবস্তীকরণ রাবার বাগান বাগান ব্যবস্থাপনা ইউনিট’ পার্বত্য অঞ্চলের অন্যতম স্বউপার্জিত সংস্থা। সংস্থাটির ৩টি শাখা মোট ১২২০০ একর রাবার বাগান সৃজন করেছিল। বাগানসমূহ ৩৩০০ টি উপকারভোগী পরিবারের নামে বন্দোবস্তী করে দেওয়ার কথা থাকলেও বিগত ৪০ বছরেও নিজেদের নামে বন্দোবস্তী পায়নি এসব পরিবার। বন্দোবস্তী না হওয়ায় এসব বাগান প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দখলে চলে যাচ্ছে। বহিরাগতদের পাশাপাশি খোদ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত অনেক কর্মকর্তা/ কর্মচারীও অসহায় উপকারভোগীদের নানাভাবে ফুসলিয়ে শত শত একর জমি নিজেদের দখলে নিয়েছেন।
সময় জার্নাল/এলআর