শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

বইমেলায় লিটল ম্যাগ চত্বর নিয়ে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ

রোববার, মার্চ ২১, ২০২১
বইমেলায় লিটল ম্যাগ চত্বর নিয়ে অসন্তোষ ও প্রতিবাদ

সময় জার্নাল প্রতিবেদক :

বিশ্বসাহিত্যে লিটল ম্যাগ একটি আন্দোলনের নাম। অনেক বড় বড় সাহিত্যিক লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেছেন। লিটল ম্যাগাজিনের মাধ্যমে একটি লেখক গোষ্ঠী একটি সৃজনশীল জায়গার প্রতিনিধিত্ব করে। বিশেষকরে তৃণমূল পর্যায় থেকে নতুন লেখক তৈরিতে লিটল ম্যাগাজিনের গুরুত্ব রয়েছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে একটু দেরিতে অনুষ্ঠিত ২০২১ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বর নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে সোসাল মিডিয়ায় কঠোরভাবে সমালোচনা করে যাচ্ছেন বিভিন্ন লেখক পাঠক ও লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদকেরা। এর জন্য দায়ী করেছেন বাংলা একাডেমীকে।

কারণ অতীতে গ্রন্থমেলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বর ছিলো বাংলা একাডেমির বহেরা তলায়। দীর্ঘদিন দাবির প্রেক্ষিতে ২০২০ সালে বাংলা একাডেমি গতবছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে স্থানন্তর করে মেলার বৃহৎ অংশের সাথে সংযুক্ত করেছিলো। কিন্তু ২০২১ সালের বইমেলায় লিটল ম্যাগ চত্বরের জন্য নির্ধারণ করেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে লেখক মঞ্চের   পেছনে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এবারে লিটল ম্যাগ চত্বর দৃষ্টিনন্দন এলাকার বাইরে পড়েছে। বোঝার উপায় নেই যে এখানে মেলার এই মূল্যবান অংশ লিটল ম্যাগ চত্বর। সহজে খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মেলায় বিশেষ আয়োজন থাকলেও লিটল ম্যাগাজিনের ক্ষেত্রে তা প্রতিফলিত হয়নি। অনেকটাই অবেহলা করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলা একাডেমী।  

লিটল ম্যাগাজিনকে ঘিরে লেখক পাঠকের ভিতর আলাদা আকাঙ্খা থাকে। যেখানে মূলত লেখক, পাঠক ও শিল্পীরা তাদের নিজস্ব ও পছন্দের স্টলে উপস্থিত থাকেন এবং সময় কাটান। নতুন নতুন প্রকাশনা থাকে স্টলে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক ও পাঠকেরা।  

লিটলম্যাগ কর্মী ও প্রচ্ছদশিল্পী চারু পিন্টু জানিয়েছেন, রোববার প্রতিবাদ হিসেবে লিটলম্যাগ চত্বরের স্টল বন্ধ রাখবে লিটলম্যাগ কর্মীরা।

কবি ও ‘শালুক’ সম্পাদক ওবায়েদ আকাশ বলেছেন, ‘লিটল ম্যাগাজিনের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। কোনো প্যাভিলিয়ন বা চত্বর বা মেলার সাইনবোর্ড কি পেছনের দিকে লাগানো থাকে? কিন্তু এবারের বইমেলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে এই অতি বিরলতম ঘটনাটি ঘটেছে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে আরও ছোট করেছে, ঘিঞ্জি করেছে, মাছবাজার, বা সবজি বাজারের মতো ছোট ছোট খুপড়ি করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পথ দেখিয়েছে।’

কবি শাহেদ কায়েস বলেন, ‘লিটলম্যাগ চত্বরটি এবার মেলার সবচেয়ে অবহেলার শিকার। অথচ এই চত্বরটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের জায়গায় রাখা দরকার ছিল। আশা করছি মেলা কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল শুধরে নেবেন।’

থিয়েটার পত্রিকা ক্ষ্যাপার নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী বলেন, ‘লিটলম্যাগ চত্বর তো অমর একুশে বইমেলার প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু বইমেলা ক্রমশই বাণিজ্যমেলায় রূপ নিচ্ছে, আর লিটলম্যাগ চত্বর অবহেলার শিকার হচ্ছে। মেলার আয়োজকেরা দ্রুতই নিজেদের ভুল শুধরে নেবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

মেলায় লিটলম্যাগের স্টল বিন্যাশ এবং আগের জায়গায় (সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের পার্শ্ববর্তী স্থানে) ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবিতে এই ধর্মঘট ডেকেছে মেলায় স্টল পাওয়া বিভিন্ন লিটলম্যাগ সম্পাদকরা।

শনিবার (২০ মার্চ) রাত ৮টায়  ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন করাত কল'র নির্বাহী সম্পাদক কবি শাফি সমুদ্র, শালুক সম্পাদক কবি ওবায়েদ আকাশ, লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম, হালখাতা সম্পাদক শওকত হোসেন, দ্রষ্টব্য সম্পাদক কামরুল হুদা পথিক ও শিং এর সম্পাদক জোসেফ প্রাপন প্রমুখ।

ধর্মঘট ডাকা বিষয়ে সম্পাদকরা জানিয়েছেন, 'আগামীকাল থেকে লিটলম্যাগ চত্বরে সর্বসম্মতিক্রমে সব স্টল বন্ধ ঘোষণা করা হলো। বিকেল ৫টায় এ বিষয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।'

বইমেলা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ শনিবার একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘লিটলম্যাগ সম্পাদক ও প্রকাশকদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই চত্বরটি নিয়ে আমরা নতুন সিদ্ধান্ত নেব।’

লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের এই বৈষম্যমূলক আয়োজনের প্রতিবাদে লিটল ম্যাগাজিন লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম, কালের ধ্বনি সম্পাদক ইমরাণ মাহফুজ, কবি ও বাচিক  শিল্পী মগ্নপাঠ সম্পাদক আহমেদ শিপলু, জলধি সম্পাদক নাহিদা আশরাফি, কবি মাহফুজা অনন্যা, লেখক মোজাম্মেল হক নিয়োগী, কবি ও সাংবাদিক  লেখমালার সম্পাদক মামুন মুস্তাফা, শ্রাবনী প্রামানিক, কথাসাহিত্যিক ড. ইশরাত তানিয়া, নিহারুণ সম্পাদক বঙ্গ রাখালসহ অসংখ্য লেখক, পাঠক ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সময় জার্নাল/ইএম/ইএইচ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল