স্পোর্টস ডেস্ক। বিশ্বকাপের দুঃস্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভাসছে বাংলাদেশের। এত বড় ব্যর্থতা আশা করেননি ক্রিকেটাররাও। এক বুক হতাশা ছাড়া কিছুই উপহার দিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহরা। বিশ্বকাপের সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার লক্ষ্যে আজ পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। মিরপুরে ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ২টায়। তবে পাকিস্তান বর্তমানে যে ফর্মে রয়েছে, তাতে করে বাবরদের হারানো সহজ হবে না। তবু ঘরের মাটিতে তরুণদের নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা না থাকায় এবার বড় সুযোগ তরুণদের।
ইনজুরির কারণে সাকিব আল হাসান পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেই। চোটের কারণে ফিরতে পারেননি তামিম ইকবাল। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি দলে নেই মুশফিকুর রহিমও। ১৬ সদস্যের দলে রাখা হয়েছে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে। বলা যায়, অভিজ্ঞতার দিক থেকে একা পড়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবু সিরিজ শুরুর আগে টাইগার দলপতি জানালেন, সাকিব-মুশফিকের শূন্যতা সেভাবে অনুভব করছেন না তিনি।
আজ তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ বললেন, ‘এটা ঠিক যে আমাদের দলটা খুবই নতুন। দলে সব তরুণ খেলোয়াড়। দলে অভিজ্ঞরা সবসময় সহায়তা করে। সাকিব-মুশফিকসহ আরও ক্রিকেটার নেই। ওরা থাকলে পরামর্শ সবসময়ই কাজে আসে। ওদের সঙ্গে আমি খুব ওপেনলি শেয়ার করতে পারি।’
সঙ্গে যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ, ‘কিন্তু ওই জিনিসটা (না থাকা) নিয়ে আমার মনে হয় না চিন্তা করে লাভ আছে। আমার যতটুকু জ্ঞান আছে ওইটুকই।’
বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর এটা টাইগারদের প্রথম সিরিজ। এই সিরিজের আগে পিছনে ফিরে তাকাতে চান না মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক বললেন, ‘বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলছে চাচ্ছি না। দৃষ্টি রাখছি এই টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এই তিনটা ম্যাচে আমরা দলের জন্য কতটুকু ভালো অবদান রাখতে পারি ব্যক্তিগতভাবে ওটাই মুখ্য বিষয় এবং ওটায় নজর দিচ্ছি। কারণ যে জিনিসগুলো আগে হয়ে গেছে সে জিনিস নিয়ে চিন্তা করলে বরং নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আমরা ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছি সবকিছু। তারপরও আমি বলব অবশ্যই সিরিজটা চ্যালেঞ্জিং হবে।’
প্রতিপক্ষ পাকিস্তান দলকে নিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তান এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল, তো আমাদের অনেকগুলো নতুন খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছে দলে। এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন।’
চারপাশ থেকে ছুটে আসছিল যখন সমালোচনার তীর, বাংলাদেশ দল তখন পেয়ে গেছে বড় এক বর্ম। বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থতার পরও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটারদের। প্রধানমন্ত্রীর কথায় উজ্জীবিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলছেন, তারা প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করবেন মাঠে শতভাগের বেশি উজাড় করে দিয়ে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার অনেক আশা নিয়ে গিয়েও প্রত্যাশা পূরণের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের কাছে হারার পর সুপার টুয়েলভে সব ম্যাচে হেরে যায় দল। বাজে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনে বিতর্কিত নানা কথায় তুমুল সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয় ক্রিকেটারদের।
ক্রিকেটারদের নিয়ে লোকের হতাশার ছোঁয়া পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনেও। এক সংবাদকর্মী প্রশ্ন করেন দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘কেন, আপনি এত হতাশ হন কেন? আমি এই হতাশা দেখতে চাই না। কয়েকটা খেলা তো তারা খুব চমৎকার খেলেছে। করোনার কারণে প্র্যাকটিস করতে পারেনি। তারপরও বাংলাদেশ আজকে বিশ্বকাপে খেলছে। বেশ কয়েকটি দেশকে হারাতে পেরেছে। এটাই তো বড় কথা। আমি বলব, যেটুকু পেরেছে আমি সেটাই।’
ক্রিকেটারদের আরও ভালো করে ট্রেনিং করানোর কথা বলেন তিনি। অল্পতেই অতি উৎফুল্ল কিংবা বেশি হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দেন ক্রিকেট অনুসারীদের।
আগেও নানা সময় ক্রিকেটারদের পাশে থেকেছেন শেখ হাসিনা। অনেক সময়ই তাকে দেখা গেছে খেলা দেখতে মাঠে ছুটে আসতে। ক্রিকেটারদের গণভবনেও ডেকেছেন কয়েকবার।
এবারও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন ও দেখেছেন মাহমুদউল্লাহ। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক বললেন, প্রধানমন্ত্রীকে সবসময় পাশে পাওয়া তাদের জন্য অভাবনীয়।
‘এটা আমি শুনেছি ও দেখেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তার কথা আমাদের আরও অনেক অনুপ্রাণিত করবে। সত্যি কথা বলতে, আমাদের দলের জন্য এটা অনেক ইতিবাচক একটা কথা।
প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আমাদের সবসময় অনুপ্রাণিত করেন, যেভাবে আগলে রাখেন, যেভাবে সাপোর্ট করেন, এটা অবিশ্বাস্য। এজন্য তাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা এতটুকু নিশ্চিত করব যেন নিজেদের শতভাগের বেশি দিয়ে খেলার চেষ্টা করতে পারি।’
সময় জার্নাল/আরইউ