বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতির আমুল পরিবর্তন করা হোক নয়তো সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সকল বিষয়ের অনার্স-মাস্টার্স বাদ দিয়ে শুধু একটি সাবজেক্ট চালু করা হোক।সাবজেক্টির নাম দেওয়া হোক"বিসিএস- অনার্স, বিসিএস-মাস্টার্স"।
অনার্স-মাস্টার্স উচ্চ পর্যায়ের ডিগ্রি।বিষয় ভিত্তিক দক্ষ জনবল তৈরি করার জন্য অনার্স মাস্টার্স ডিগ্রি দেওয়া হয়।কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অনার্সে ভর্তি হয়েই বিসিএস গাইড নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে।সারা বছর বিসিএস গাইড পড়ে ডিপার্টমেন্টের পরীক্ষার নোটিশ দিলে অনার্সের নোট খোঁজা শুরু করে।পরীক্ষার মাঝে যে এক সপ্তাহ সময় পায়,সেসময় একাডেমিক পড়াশোনা শুরু করে।বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টের একই অবস্থা!!!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে গেলে দেখতে পাবেন, লাইব্রেরীর কোন চেয়ার খালি নেই!!!
কিন্তু সবার হাতেই প্রায় বিসিএস রিলেটেড বইপত্র !!!!
তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করার দরকার কি?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমস্ত ডিপার্টমেন্ট বিলুপ্ত করে শুধুমাত্র বিসিএস ডিপার্টমেন্ট চালু করলেই তো হয় !!!
আমার এই মতের সাথে অনেকেই কঠিন দ্বিমত পোষণ করতে পারেন।করাটাও স্বাভাবিক।বলতে পারেন, সরকারি এত অফিসার কিভাবে নেওয়া হবে?
কেন?সরকারি অফিসার হওয়ার জন্য কি সারা পৃথিবীর সমস্ত জ্ঞানের সার নির্যাস জানা কি জরুরি?
মানবিক বিভাগের একজন শিক্ষার্থী যখন ব্যাংকের চাকরিতে যোগদান করে,তখন সে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করে কিভাবে?
চাকরি নেওয়ার পর তাদের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হয়।
সেক্ষেত্রে সমস্ত অফিসারদের নিয়োগের পর তাদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিলেই তো হয়।(যতদূর জানি দেওয়া হয়)
তাহলে চাকরি নেওয়ার পূর্বেই তামাম দুনিয়ার বিষয়ে জানা লাগবে কেন?
একজন ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা করবে।
চিকিৎসা বিষয়ক দুনিয়ার সর্বশেষ জ্ঞানটি সে জানুক,সেটাই তার জানার দরকার।
উগান্ডার প্রেসিডেন্টের নাম তাকে কেন মুখস্থ করতে হবে?
একজন কৃষি অফিসার কৃষি বিষয়ে অগাধ জ্ঞান লাভ করবে।
কত সালের কত তারিখে নাগাসাকিতে বোমা ফেলা হয়েছিল, সেটা তাকে কেন জানতে হবে?
সব বিষয়ের চাকরি প্রার্থীদেরকেই তামাম দুনিয়ার খুটিনাটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় এজন্য অনার্সের শুরুতেই ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনা বাদ দিয়ে উগান্ডার রাজধানীর নাম মুখস্থ করে।
এর ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এত এত ডিপার্টমেন্ট কিন্তু ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে না।
হয় বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করা হোক নতুবা সমস্ত ডিপার্টমেন্ট বিলুপ্ত করে বিসিএস ডিপার্টমেন্ট চালু করা হোক।
(করোনাকালীন আবোলতাবোল)
মোঃ আবুল কালাম আজাদ,
সহকারী শিক্ষক,
হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়,
ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ।