সময় জার্নাল প্রতিবেদক: বরিশালের শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (এসবিএমসি) এর ৫৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস আলোচনা সভা, র্যালি ও ঘোড়ার গাড়ীতে প্রদক্ষিণসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
শনিবার (২০ নভেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বরিশালের শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানানো হয় ও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
বিশিষ্ট চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হতে এম বি বি এস ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ১৯৮২ সালে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটালে সহকারী সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করেছেন।
বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. আব্দুল গনি মোল্লা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লা, ডা. তারিক মেহেদী পারভেজ, জনাব মুহিতুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম ইয়ার-ই-মাহাবুব, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের স্পেশাল এ্যাসাইনমেন্ট অফিসার ড. আশিকুর রহমান বিপ্লব প্রমুখসহ বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসকদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। এছাড়া এই মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং পরবর্তীতে বিসিপিএস এর সেক্রেটারি পদে দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক ডা. টি আই এম ফারুককে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। এছাড়াও ছাত্রদের জন্য ট্রাস্ট গঠন করা হয় এবং এই মেডিক্যাল কলেজের এনাটমি বিভাগের সকলের প্রিয় শিক্ষক ডা. ক্যাপ্টেন সিরাজুল ইসলাম স্যারের ম্যুরাল উম্মোচন করা হয়।
এসবিএমসি এর ৫৩তম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ বাংলাদেশের পুরানো আটটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম। মাত্র ৫০ জন ছাত্র নিয়ে যে মেডিক্যাল এর যাত্রা শুরু করেছিল, সেখানে এখন প্রতিবছর দুইশত এর অধিক ছাত্র-ছাত্রী এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হয়। এই বিদ্যাপিঠ হতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে প্রায় ১০০০ চিকিৎসক দেশ বিদেশে কর্মরত আছে। প্রায় ২৫০০ চিকিৎসক স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে দেশ বিদেশে শিক্ষকতায় ও গবেষণায় জড়িত আছে। সামগ্রিকভাবে এ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে যে পরিমাণ মানসম্পন্ন চিকিৎসক প্রয়োজন তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এই মেডিক্যাল কলেজ থেকে উঠে আসে।
তিনি আরো বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে থেকে পাশ করা চিকিৎসক, যারা দেশে বা বিদেশে আছেন তাঁরা সকলেই সুনামের সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস চ্যান্সেলর, ডাইরেক্টর সহ ডিন ও চেয়ারম্যান হিসাবে অনেকেই দৃঢ়তার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসাবে এই মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ব্যক্তি হওয়ায় আমি গর্বিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবেও এই মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ব্যক্তি হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। চক্ষু চিকিৎসক সমিতি, অর্থোপেডিক্স, গাইনী, সার্জারী, ইএনটি ও বিসিপিএস সহ বিভিন্ন এসোসিয়েশন ও সোসাইটিতে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকবৃন্দ সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এই মেডিক্যাল কলেজের একজন হিসাবে পরিচয় দিতে আমরা গর্ববোধ করি।
এমআই