স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের গেছে যে দিন, একেবারেই কী গেছে, কিছুই কি নেই বাকি?- সেই যে চলতি বছরের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করে এসে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ দল, এরপর নিউজিল্যান্ডের সিরিজেও ব্যাটসম্যানদের দৈন্যতা স্পষ্ট। সেটির ছাপ পড়ল বিশ্বকাপের মঞ্চে। ফলাফল যা হওয়ার তাই-তো হলো! একেবারেই বিশ্বস্ত হয়ে ফিরল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
বিশ্বকাপের পর ঘরে ফিরেও স্বস্তি নেই। পাকিস্তানের বিশ্বমানের বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে যে ভুগবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা, সেটি একপ্রকার অনুমেয়ই ছিল। তবে এতোটাও যে হতশ্রী ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখতে হবে, সেটি কেই-বা ভেবেছিল আগে? তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১২৭ রানের পুঁজি পাওয়া বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ম্যাচে স্কোরবোর্ডে তোলে মাত্র ১০৮ রান। আজ (সোমবার) তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১২৪ রানের সংগ্রহ বাংলাদেশ দল। ইনিংসে ডট বল ছিল ৬৮টি।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খুইয়েছে স্বাগতিকরা। আজ হোয়াইটওয়াশ বা ধবলধোলাই এড়াতে পাকিস্তানকে আটকাতে হবে ১২৪ রানের মধ্যে। বাংলাদেশের এই রানের মধ্যে ৪৭ রানই এসেছে ওপেনার নাঈম শেখের ব্যাট থেকে। অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলে ৫০ বলে ৪৭ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
একটি জয়ের দেখা পেতে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলের ওপেনিং জুটিতে আরেক দফা এসেছে বদল। সাইফ হাসানের ব্যর্থতায় আজ নাঈমের সাথে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে বদলায়নি বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতার গল্প। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে অভিষিক্ত পাকিস্তানি পেসার শাহনেওয়াজ দাহানির বলে বোল্ড শান্ত ফেরেন ৫ রান করে।
একাদশে ফেরা শামীম হোসেন এদিন ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। এক প্রান্তে ধীর গতির নাঈমকে রেখে অন্যপ্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জুটিতে যোগ হয় ৩০ রান। কিন্তু পাকিস্তানের একাদশে ফেরা লেগ স্পিনার উসমান কাদেরের করার প্রথম ওভারেই তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন ডিপ মিড উইকেটে। থামেন ২৩ বলে ২২ রানে।
শামীমের বিদায়ের পর খোলস ছেড়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন নাঈম। নিজের খেলা প্রথম ২১ বলে ১০ রান করা এই ব্যাটার উসমান কাদিরের করা ইনিংসের ১০ম ওভারে হাঁকান একটি করে চার, ছক্কা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন সিরিজ জুড়ে ইতিবাচক ব্যাটিং উপহার দেওয়া আফিফ হোসেন। ১২তম ওভারে উসমান কাদিরকে আফিফ হাঁকান ২ ছক্কা। খানিক পর কাদিসের দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ। তার ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে দলীয় স্কোর যখন ৮০ তখন আফিফ আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের দশম ওভারে প্রথম বাউন্দারির স্বাদ পাওয়া নাঈমকে এরপর কিছুটা আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যায়। তবে ১৯তম ওভারে আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন এই তরুণ। ফিফটি পথে হাঁটতে থাকা নাঈম ৪৭ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ৫০ বলের ইনিংসটি সাজান সমান ২টি করে চার-ছয়ের মারে। যেখানে ডট খেলেন ২২টি।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১৪ বলে ১৩ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২ রানে পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের হয়ে উসমান কাদির ও মোহাম্মদ ওয়াশিম সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন।
এমআই