যতটুকু বাকি
নাহ! আর কিছুতেই না,
আমাকে দিয়ে আর কিচ্ছুটি হবে না,
আমার স্রোতোধারা এখানেই শেষ।
এবার একটু থামি, একটু জিরোই,
প্রাণ খুলে দম নেই, বুক ভরে শ্বাস,
আর আমি ছুটবো না, এবার ঘুমোই।
থেমে গেলো খরস্রোতা ছোট নদীটি,
ভেবেছিল বল পেলে ছুটবে আবার,
তার আগে এইবেলা বিশ্রাম চাই।
ঘুমিয়ে পড়লো সেই ছোট্ট নদী,
ঘুমিয়ে পড়লো যেন সব কাজ শেষ।
সকাল গড়িয়ে হলো মধ্য দুপুর,
তবু তার দুই চোখে ঘুমের আবেশ।
মধ্যগগনে হাঁকে রৌদ্রের তেজ্ব,
ছোট্ট নদীর যেন অঢেল আয়েশ।
এমনই করেই যেই বেলাটা গড়ালো,
হঠাৎ ভাঙলো ঘুম ছোট্ট নদীর।
নাহ! আর কিছুতেই না,
মনে হলো তার আর কিচ্ছু করার নেই।
দিন শেষ হয়ে যাবে একটু পরেই।
ছোট নদী চেয়ে দেখে সর্বশরীর,
জলজ আগাছা তাকে বেঁধে ফেলেছে,
হারিয়ে গেছে তার অবারিত ঢেউ,
কাকে নিয়ে ছুটে যাবে অসীমের পথে?
হতাশায় ভেঙে পড়ে ছোট্ট নদী,
আর বুঝি এগোবার কোনো পথ নেই,
ত্যাজ্য হবেই সে জঞ্জালে ঢেকে,
ভুলবে সবাই এই নদীটার কথা।
হঠাৎ চমকে ওঠে ছোট্ট নদী,
টুপ করে মন যেন গেয়ে ওঠে গান -
নীলের ধারার পাশে পৌঁছিয়ে মুসা,
দেখেছিল, পেরোবার কোনো পথ নেই,
তীব্র আবেগে আর দৃপ্ত গলায়,
বলেছিল —
কক্ষণো, কক্ষণো নয়,
আমার প্রতিপালক সাথেই আছেন,
পথ আমি খুঁজে পাবো, পাবো নিশ্চয়।
সে আবেগে ছোট নদী উছলিয়ে ওঠে,
দিন তার শেষ হতে যতটুকু বাকি,
তাই বা কম কিসের পথ পেরোবার?
ছুটে চল ছোট নদী অসীমের পথে,
তোমার প্রতিপালক সাথেই আছেন,
পথ তুমি খুঁজে পাবে, পাবে নিশ্চয়।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৩০ নভেম্বর ২০২১।