বরফের দিনগুলি।শেখ ফাহমিদা নাজনীন
বাইরের পৃথিবীতে মাঘের মহোৎসব, বরফের দিন,
হিমালয় শ্বাস ছাড়ে আশ্লেষে,
বাইরের পৃথিবীটা কুয়াশায় ভরে যায়।
টবের গোলাপ ঝাড় হলদেটে, জবুথবু,
শীতের ছোঁয়ায় জড়োসড়ো।
নদীর বুকের পরে কুয়াশার সর পড়ে,
বালিহাঁস সেই সর পালকে মাখায়।
শীত আসে দিন গুনে মহাসমারোহে সেজে,
শীত যেন বিশেষ অতিথি।
শীত আসে স্নায়ুতে আবেশ মিশিয়ে দিয়ে,
আহ্লাদে ভাতঘুম পাড়াতে।
সাজানো দোকানগুলি কাঁচের এপার হতে,
পোশাকের কথকতা, ছড়া, কবিতা,
সাজানো দোকানগুলি ছুঁতেই পারে না যারা,
আরব্য রজনীর গল্পগাথা।
বাইরের পৃথিবীতে বরফের দিন আসে,
দেয়ালের ঐ পারে অন্যজীবন।
বাইরের পৃথিবীটা রিলিফের কম্বলে,
দেয়ালের ঐ পারে শখের আগুন।
কতো কি যে বাহারে শীতের উদযাপন,
বরফের দিনগুলি হয়ে ওঠে দ্যুতিময়।
খাবারের পসরায় উনুন হাঁপিয়ে ওঠে,
দিনগুলি কতো ভাবে, কতো নামে নাম পায়।
জানালার শার্সিটা বন্ধ হয়েই থাকে,
শীত এসে এখানেই থেমে যায়।
জানালার ঐ পাশে দাঁত খিচিয়ে আসে,
ছেঁড়া কম্বল কাঁপে ঠকঠকিয়ে।
মাঝরাত্তির তবু মা'র চোখে ঘুম নেই,
অক্লেশে বুকে চেপে কচিটা,
সবটুকু উত্তাপ বিনিময় হতে থাকে,
ল্যাম্পপোস্টের নীচে আজব জীবন।
বরফের দিনগুলি লম্বা লাইন টানে,
পৃথিবীটা দুই পারে ভাগ হয়।
ওপারে বেহেশত যেন রঙ বাহারির খেলা,
উষ্ণতা বয়ে যায় সঞ্চরণে।
এই পারে শীত আসে রাজকীয় সমাবেশে,
ছুঁয়ে যায় ভুখা পেট, অস্তি, মজ্জা।
বরফের দিনগুলি সংকেত দিয়ে যায়,
চোখের সামনে আনে অন্য ছবি।
পরপারে টানা হবে এমনই বিভেদ রেখা,
ওপারে উষ্ণ হাসি,
এই পারে রয়ে যাবে হেরে যাওয়া বিস্ময়।
সময় জার্নাল/আরইউ