আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী গাড়ি চালিয়ে দেওয়ায় অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকডজন। রোববার সকালের দিকে ইয়াঙ্গুনে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত বাহিনী গাড়ি চালিয়ে দেওয়ায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও বলেছে, বিক্ষোভের স্থান থেকে আরও কমপক্ষে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি চাপায় আরও কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর একটি গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় কয়েক জনের মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সকালের এই সহিংসতার পরও রোববার দুপুরের দিকে ইয়াঙ্গুনের অপর একটি স্থানে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে।
নিরাপত্তার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্ষোভকারী টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, আমি ধাক্কা খাই এবং একটি ট্রাকের সামনে পড়ে যাই। একজন সৈন্য রাইফেল দিয়ে আমাকে পেটান। কিন্তু আমি সেটি ঠেকিয়ে দিয়েছি এবং তার পেছনে ধাক্কা মেরেছি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। আমি আঁকাবাঁকাভাবে দৌড়ে পালিয়ে যাই। ভাগ্যবশত আমি পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে দেশজুড়ে শুরু হওয়া অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অভিযানে এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
সামরিক বাহিনীর রক্তাক্ত অভিযান সত্ত্বেও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ করে আসছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। বিরোধীদের ছায়া সরকার বলেছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের গাড়ি চাপা দিয়ে ও গুলি চালিয়ে হত্যার দৃশ্য দেখে তাদের হৃদয় ভাঙছে।
রোববারের হামলার পর দেশটির বিরোধীদের জাতীয় ঐক্যের সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সন্ত্রাসবাদী সামরিক বাহিনীকে কড়া জবাব দেবো; যারা নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের নৃশংসভাবে, অমানবিকভাবে হত্যা করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে ‘ফ্ল্যাশ মব’ বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাণ্ডব চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এ বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে টেলিফোন করা হলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এমআই