বুধবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিব শতবর্ষ, বাংলাদেশের বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী, মহান বিজয় দিবস ২০২১ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শতাধিক (৭২৭) নন রেসিডেন্ট ছাত্র-ছাত্রীদের (চিকিৎসকদের) বৃত্তি প্রদান, বিশেষ শিশুসহ সাধারণ শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
আজ বুধবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আয়োজিত মহতী এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সম্মানিত সচিব জনাব আলী নূর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ডাবলু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ শিশুসহ সাধারণ শিশুদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার কেক কেটে শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। এসময় শিশু অনুষদের সম্মানিত ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মালা রানী ভৌমিক।
পরে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি। সবশেষে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
নন রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক, এমপি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনও ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের চলমান উন্নয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থেকে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশংসা করেন বলেন, করোনা মহামারীর সময়ে দেশের রোগীরা দেশেই চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এথেকেই প্রমাণিত হয় রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ কাজ চলছে। এই হাসপাতালটি চালু হলে দেশে রোগীদের আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণ ওমিক্রণের প্রভাবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। দেশের অবস্থা ভালো আছে। আমরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করছি। আমাদের সকল কাজ চলছে, কিন্তু ভুলে গেলে হবে না যে, করোনার সংক্রমণ এখনও শেষ হয়নি। ওমিক্রনের প্রভাবে তা আবার বাড়তে পারে। তাই সতর্ক হতে হবে। টিকা নিলেও মাস্ক পড়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ওমিক্রনে আক্রান্ত দুই নারী ক্রিকেটার ভালো এবং সুস্থ আছেন। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। জায়গা পরিবর্তনের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য, অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের কোনো রোগীকে যাতে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে না হয় সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ কমলেও করোনা চলে যাইনি। তাই অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে। ভ্যাকসিন নিতে হবে। করোনা ভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নেওয়ার ৬ মাস পরে শরীরে এন্টিবডির উপস্থিতির পরিমাণ কমতে থাকে। তাই বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। তাঁর শ্বাসকষ্ট নেই, উচ্চ রক্তচাপ ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন সবকিছুই স্বাভাবিক। গতকালকের চেয়ে তিনি অনেক ভালো আছেন। ডায়াবেটিস এর মাত্রাও স্বাভাবিক। তাঁকে আরো দুই একদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তাঁর প্রয়োজনীয় সবধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
এমআই