বুধবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান, বৃক্ষরোপণ, পুষ্পস্তবক অর্পণ, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র উদ্বোধনসহ নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস ২০২১ উদযাপিত হয়েছে।
সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার নিয়ে নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস ২০২১ উদযাপিত হয়েছে।
কর্মসূচীর মধ্যে ছিল ১৬-ই ডিসেম্ব (বৃহস্পতিবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড্ডয়ন, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বি ব্লকের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, পরবর্তীতে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ১০টায় বি ব্লকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, রক্তদাতাদের বিনামূল্যে হেপাটাইটিস বি, সি, ম্যালেরিয়া, এইচআইভি, সিফিলিস রোগের স্ক্রিনিং টেস্ট করাসহ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর মহতী আয়োজন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী ইত্যাদি।
এছাড়াও রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শপথ পাঠে অংশগ্রহণের জন্য মহতী আয়োজন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ-এর নেতৃত্বে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বি ব্লকের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীনবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, অফিসপ্রধানগণ, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
পরবর্তীতে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বি ব্লকে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবশ্যই উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। যেকারণেই আজ আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বড় বড় কর্মকর্তা হতে পারছি। দেশ স্বাধীন না হলে আজও আমাদেরকে পাকিস্তানের গোলামী করতে হতো। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। তবে আমরা যদি নিজ নিজ দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) এমনভাবে গড়ে তোলা হোক যাতে করে দেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে না হয়। বঙ্গবন্ধুর সেই লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ৬০ বছরের নিচে যেকোনো সুস্থ মানুষ বছরে ৩ বার রক্ত দিতে পারেন। এতে করে অনেক মানুষের জীবন বেঁচে যাবে। রক্তদানের মাধ্যমে পরকালেরও পুণ্য অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া রক্তদানের সময়ে কয়েকটি রোগ, ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য রক্তদাতার বেশ কয়েকটি পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয়। এর ফলে ঐসকল রোগ রক্তদাতার রয়েছে কিনা তা জানা সম্ভব হয়।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ। তাঁর প্রয়োজনীয় সবধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে তিনি ৯০ ভাগ সুস্থ আছেন। আশা করি, তিনি কয়েকদিনের মধ্যেই বাসা ফিরে যেতে পারবেন। সেতুমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাসেবা নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, চিকিৎসার জন্য রোগীদের দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নির্মাণাধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু হলে দেশেই রোগীদের আরো উন্নত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমানেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিআইপিসহ যেকোনো রোগীর উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদানের সম্পূর্ণ সক্ষমতা রয়েছে।
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজনের নানা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, নার্সিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ।
সময় জার্নাল/ইএইচ