অর্পণ ধর, রাবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সদ্য ভর্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে৷ হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে নিজের আসন দখল করে নিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মেধাবীরা। চোখে-মুখে আবেগ, উৎকণ্ঠা ও আনন্দ ফুটে উঠছে। বাবা-মায়ের একরাশ স্বপ্ন নিয়ে মতিহারের এই সবুজ ক্যাম্পাসে পা রেখেছে নবাগত শিক্ষার্থীরা।
আজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন। নিজ নিজ বিভাগ, জেলা সমিতি এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন থেকে বরণ করে নিচ্ছে তাদের। সব কিছু মিলিয়ে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে এক উৎসবমূখর পরিবেশ।
আড্ডা-গান, বন্ধু ও বড়দের সঙ্গে পরিচয়ে যেন ব্যস্ত সময় পার করছেন এ নবীনদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহণ মার্কেট, আমতলাসহ ক্যাম্পাসের প্রতিটি অঙ্গণ আজ মেতে উঠেছে। ছেলে-মেয়েদের স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ দেখতে নবীনদের সঙ্গে এসেছেন তাদের অভিভাবকরাও।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে আজ ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের মধ্যে দিয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করেছে। শিক্ষকরা নবীনদের ফুল, কলম ও বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী উপহার দিয়ে ক্যাম্পাসে স্বাগত জানান। এসময় শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য নবীনদের নানা পরামর্শও দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে কথা হয় ফোকলোর বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী সৃজনের সাথে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি বলেন, করোনার কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন বার বার ভেঙ্গেছে। অবশেষে দীর্ঘ দেড় বছর অপেক্ষার পর দেশের অন্যতম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।
টনি বিশ্বাস। ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিনের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারার যে অনুভূতি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনে বিভাগে বরণ করে নেওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি তা পূরণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা তাবাসসুম আশা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ সাধনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একটি অন্য রকম অনুভূতি। ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠালগ্নে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও আজ প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে ৬৮ বছরের পুরনো এ বিদ্যাপীঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি অনুষদের অধীনে ৫৯টি বিভাগ রয়েছে। বর্তমানে শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০।
সময় জার্নাল/এলআর