বরগুনা প্রতিনিধি : মা ও নানির সঙ্গে লঞ্চে করে ঢাকা থেকে বাড়ি বরগুনা ফিরছিল লামিয়া-সামিয়া। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চের আগুনে তাদের মা এখনও নিখোঁজ। পঞ্চাশোর্ধ্ব নানি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আর জমজ বোন লামিয়া ও সামিয়া মরদেহ হয়ে ফিরেছে বাড়িতে।
বাড়িতে আছেন নানা আব্দুল আজিজ, সত্তরোর্ধ্ব নানার চোখের পানি গেছে শুকিয়ে গেছে, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি। লামিয়া-সামিয়ার বাবা রবিউল হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরছেন তাদের মাকে। রবিউল ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতেই থাকতেন লামিয়া-সামিয়া।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসন থেকে দুই বোনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়।
জানা গেছে, বরগুনা তালতলী উপজেলার আগাপাড়া এলাকার আব্দুল আজিজের দুই নাতনি লামিয়া-সামিয়া (৫) এবং ছেলের বউ শিমু আক্তার (২৬) আর স্ত্রী দুলু বেগম (৫৫) ঢাকা থেকে বরগুনা আসতেছিল। তারা অভিযান-১০ লঞ্চে উঠেছিল বলে আব্দুল আজিজ জানতে পারেন।
এরপর খবর আসে লঞ্চে আগুন লেগেছে। ওই আগুনে আব্দুল আজিজের দুই নাতনি পুড়ে মারা গেছেন। তার ছেলের বউকে খুঁজে পাচ্ছেন না। স্ত্রী বরিশালের হাসপাতালে ভর্তি।
দুই নাতনি হারানোর শোকে পাথর হয়ে গেছেন আব্দুল আজিজ। বাড়ির উঠান নাতনিদের মরদহে আসলে, কিছুই বলতে পারছেন না তিনি। আশেপাশের লোকজন এসে সান্ত্বনা দেওয়া চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেই ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন তারাও।
এমডি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে ৩৭টি মরদেহ বুঝে দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে সাতজনের লাশ শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। বাকি ৩০ জনের মরদেহের বেলা ১১টার দিকে গণজানাজা নামাজ পড়ানো হয়। জানাজার পরে আরও ৩ জনের লাশ শনাক্ত করে তাদের পরিবার। এই তিন জনের লাশও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ২৭ জনকে পৌরসভার পোটকাখালী গণ কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ৩০ জনের জানাজা নামাজ পড়ানো হয়। পরে তিনটি লাশ তাদের পরিবার শনাক্ত করলে সেগুলো গণ কবরে দাফন করা হয়নি।
সময় জার্নাল/আরইউ