এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের তারাইল গ্রামের যুবক আবু বকর মাতুব্বরের (২৫) চোখ পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন ওই যুবক।
ওই যুবকের দাবী, ২০০৭ সালের প্রথম দিকে প্রতিবেশী ও চাচাতো ভাই নান্নু মাতুব্বর কৌশলে আমগাছে আম পাড়ার কথা বলে জোরপূর্বক উঠতে বাধ্য করে। এক পর্যায়ে নিচ থেকে প্রায় ৩০ ফুট লম্বা একটি চিকন (নলী) বাঁশের অংশ ছুড়ে মারলে তা সরাসরি গিয়ে চোখে আঘাত করলে গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুত্বর আহত হন তিনি।
তিনি (আবু বকর মাতুব্বর) জানান, তার বাবা গাজীপুর এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করার তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসা না দেয়ায় ডান চোখ নষ্ট হয়ে যায় তার। তিনি দাবী করেন, এ ঘটনার ছয় থেকে সাত মাস পরে বাম চোখও আক্রান্ত হয় এবং ধীরে ধীরে বাম চোখের দৃষ্টি শক্তিও কমতে থাকে। বর্তমানে বাম চোখেও কিছুই দেখা যায় না, শতভাগ অন্ধ বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরো জানান, জমি দখল করার উদ্দেশ্য চাচাতো ভাই নান্নু মাতুব্বর, আব্দুল হাই মুন্সী ওরফে নসু মাতুব্বর, সেন্টু মাতুব্বরসহ তাদের স্ত্রীরা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
আবু বকর মাতুব্বরের মা নুরুন্নাহান খাতুন জানান, তার স্বামীর আপন চাচাতো ভাই মজিদ মাতুব্বর ও আপন ভাই মোতালেব মাতুব্বরের পরিবারের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই ধারাবাহিতকতায় তাদের তিন পুত্র আমার একমাত্র ছেলে আবু বকর মাতুব্বরকে হত্যার উদ্দেশ্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি জানান, ঢাকাসহ ভারতের চেন্নাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ১৫ বছর ধরে অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসায় স্বর্বস্ব খুইয়েছেন তিনি। তিনি দাবি করেন ৪০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে, ধার-দেনা করতে হয়েছে মানুষের কাছ থেকে।
তিনি দাবি করেন, এ ঘটনায় ফরিদপুর জেলা জজ আদালতের লিগ্যাল এইড শাখায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপুরণ দাবি করে মৃত. মজিদ মাতুব্বরের ছেলে নান্নু মাতুব্বর ও আব্দুল হাই মুন্সী ওরফে নসু মাতুব্বর এবং মৃত মোতালেব মাতুব্বরের ছেলে সেন্টু মাতুব্বর ও তাদের তিনজনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এদিকে বিচার চাওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন হুমকী ধামকী দিচ্ছে। তারা যে কোনো সময় বড় ধরণের ক্ষতি
সাধনও করতে পারে বলেও জানান তিনি। এ ঘটনায় আবু বকর মাতুব্বর ও তার মা নুরুন্নাহার খাতুন দ্রুত ন্যায়
বিচার ও ক্ষতিপুরণ দাবি করছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রবাসী নান্নু মাতুব্বরের স্ত্রী হামিদা বেগম জানান, আবু বকর নিজেই গাছে উঠেছিলো, কেউ জোর করে গাছে উঠতে বাধ্য করেনি। এবং আম পাড়ার সময় নিজেই কোটা চায়, যেটি চেলে দেয়ার সময় চোখে আঘাত লাগে। তিনি জানান, আবু বকরদের পারিবারিক অবস্থা দূর্বল হওয়ায় তিন বছর চিকিৎসার খরচ বহন করি। ২০২১ সালে স্থানীয়রা বসে মিমাংসা করাও হয়।
তিনি বলেন, এখন আবার কেনো দাবি করছে তা আমাদেরও জানা নেই।
এমআই