গোলাম আজম খান,কক্সবাজার প্রতিনিধি:
মিয়ানমারের নিষিদ্ধ ঘোষিত আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু জুনুনীর ভাই মো শাহ আলীকে আটক করেছে ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদকসহ কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক। এসময় তার হেফাজত থেকে এক অপহত ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু জুনুনী। সম্প্রতি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন গোয়েন্দা তথ্য পায় যে, আতাউল্লাহর ভাই শাহ আলী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি কবে থেকে কেন এই ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানান ক্যাম্পে বড়ো ধরনের নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সে ক্যাম্পে আসতে পারে বলে আশংকা এপিবিএন এর।
আজ রবিবার দুপুরে ১৪ এপিবিএন এর পক্ষে অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈমুল হক এক প্রেস রিলিজ দিয়ে জানান আজ রবিবার ভোরে উখিয়ার কুতুপালং ৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি আস্তানা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় সেখান থেকে চোখ বাধা অবস্থায় সাদিকুল নামে একজন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। এই আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় তৈরি একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়।
নাঈমুল হক জানান, মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার প্রধান আতাউল্লাহর ভাই শাহ আলী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন, এমন তথ্য পায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। এই তথ্যের ভিত্তিতে ড্রোন দিয়ে তল্লাশী করা হয়। আরসার প্রধান আতাউল্লাহর ভাই শাহ আলী সেখান অবস্থান করার তথ্য নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় এপিবিএন পুলিশের টিম। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি কবে থেকে কেন এই ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০১৭ সালে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান নেন। তখন থেকেই এসব ক্যাম্পকেন্দ্রিক অপহরণ বানিজ্য মাদক ব্যবসা খুন ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপকর্ম করে আসছিল বলে বিস্তর অভিযোগ উঠে আরসার বিরুদ্ধে।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা কুতুপালং ক্যাম্পে ব্রাশফায়ারে নিহত হন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নেতা মুহিবুল্লাহ। আরসার প্রত্যক্ষ্য মদদে মুহিবুল্লাহ খুন হন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডের পর থেকে ১৪ এপিবিএন কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে দুই শতাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক গ্রেফতার হয়েছেন।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) নাইমুল হক বলেন, এ পর্যন্ত তথাকথিত আরসা নামধারী ১১৪ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। তাছাড়া মাদক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, চোরাচালানে জড়িত, ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত আরও ৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সময় জার্নাল/এলআর