নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর খালগুলোর একটির সাথে অন্যটির সংযোগ তৈরি করে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগ সংস্থার সাথে একাধিক সভা করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। ঢাকা শহরের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে এখনও ৫৩টি খালের অস্তিত্ব রয়েছে। এসব খাল উদ্ধার করে যদি নৌ চলাচল ও দুই পাশে ওয়াক ওয়ে নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়, পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন করা যায় তাহলে মানুষ ভেনিস ঘুরতে না গিয়ে ঢাকা শহরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধির হাতে দায়িত্ব দিলে খাল উদ্ধার করা সহজ হবে। কারণ জনপ্রতিনিধিদের সাথে জনগণ থাকে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করলে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। সে উদ্দেশ্যেই রাজধানীর কিছু খাল ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দুই সিটি করপোরেশন জোরালো অভিযান চালিয়ে খাল উদ্ধার কাজ শুরু করেছে, যার ফলাফল এখন দৃশ্যমান।
মন্ত্রী বলেন, কয়েকজন মানুষের জন্য রাজধানীর দুই কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হতে পারে না। আর এটা কখনোই করতে দেওয়া হবে না। রাজধানীতে পরিকল্পিতভাবে ট্রাক ও বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ করার কাজ চলছে। যেখানে যে পরিমাণ রাস্তার দরকার তা নির্মাণ করতে হবে। আবাসনের জায়গায় আবাসন হবে। সবার জন্য কল্যাণকর ঢাকা গড়তে যা যা দরকার তার সবই করতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
রাজধানীতে অবৈধভাবে দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধার করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত খালগুলো সংস্কার করা হলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি নগরবাসীকে একটি আধুনিক-দৃষ্টিনন্দন ও বাসযোগ্য নগর উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, যারা সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন, তারা স্বাভাবিকভাবেই এখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে সব জায়গায় একটি মেসেজ চলে যাবে যে অবৈধভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। শুধুমাত্র এখানকার খাল উদ্ধার হবে আর অন্যগুলো হবে না, এমনটা ভাবা উচিত হবে না দখলদারদের। ঢাকা শহরের যারা জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ করেছেন বা করার পাঁয়তারা করছেন তারা সতর্ক হয়ে যান। কোনো দখলবাজদের বরদাস্ত করা হবে না। জনগণের কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সবকিছু করবে সরকার।
রাজধানীর অন্যান্য খালগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ওয়াটার বোর্ডের অধীনে থাকা খালগুলো হস্তান্তরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকা খালগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অনেক সিটি করপোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট, সাবওয়ে, টানেল এবং মেট্রোরেল করেছে। আমাদের সিটি করপোরেশনগুলো আগের তুলনায় অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমি বিশ্বাস করি অচিরেই দেশের সকল সিটি করপোরেশন আত্মনির্ভরশীল হবে।
খাল উদ্ধার কার্যক্রম পরিদর্শনকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজাসহ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই