সময় জার্নাল ডেস্ক। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাবেক বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপির ভাইরাল হওয়া একটি বক্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে, যেখানে তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের ফার্স্ট ক্লাস চোর এবং ডাক্তারদের সেকেন্ড ক্লাস চোর বলে অভিহিত করেছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস এন্ড রেস্পন্সিবিলিটিজ’ (এফডিএসআর) এর পক্ষ থেকে আমরা জনাব মির্জা আযমের এই অসত্য এবং মানহানিকর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি।
মির্জা আজমের বক্তব্য যদি সত্যও ধরে নেই, তাহলে তার কাছে আমাদের বিনীত প্রশ্ন, সরকারী চাকুরিরত ১২০০ ইঞ্জিনিয়ার শুধু লুটপাটই করে? তাহলে সেই লুটপাটের ভাগ কতদূর পর্যন্ত যায় এই তথ্যটাও মির্জা আজম সাহেব নিশ্চয়ই জানেন এবং জাতির সামনে তাহলে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তারই প্রকাশ করা উচিত। সামগ্রিকভাবে একটি সিস্টেমকে ত্রুটিযুক্ত রেখে এভাবে খণ্ডিত বক্তব্য দিয়ে মির্জা আযম সাহেবরা মূলত বিদ্যমান দুর্নীতিকেই জিইয়ে রাখছেন।
ডাক্তারদের নিয়ে জনাব মির্জা আজম প্রদত্ত বক্তব্যের পুরোটাই অসত্য। হাসপাতালে রোগীদের পেছনে ব্যয়, ঔষধপ্রদান, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের সাথে কতজন ডাক্তার জড়িত? মির্জা আযম সাহেব কি জানেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ অনেক সরকারী হাসপাতালে কত শয্যার বিপরীতে কত বেশী রোগী ভর্তি থাকে? স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির সাথে কতজন ডাক্তার জড়িত এই প্রশ্নটিও আমরা তার কাছে করতে চাই? দুর্নীতির এই প্রশ্নের উত্তর তিনি কেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের কাছে জানতে চান না? মির্জা আজম সাহেব ডাক্তারদের চোর বলেছেন। তার কাছে অনুরোধ; সৎসাহস থাকলে বলেন বেগমপাড়ায় কোন রাজনীতিবিদের বাড়ি নাই। আর যদি থাকে তাহলে কি ঢালাওভাবে বলা যাবে সব রাজনীতিবিদ চোর?
সস্তা জনপ্রিয়তা পাবার লক্ষ্যে দেওয়া জনাব মির্জা আজমের বক্তব্যের অধিকাংশই অসত্য এবং এর মধ্য দিয়ে প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের আড়াল করার সুক্ষ্ম অপচেষ্টা প্রতীয়মান। তিনি দুর্নীতির বিশাল এন্টার্কটিকা না দেখে কেবল দুয়েকটা ভাসমান বরফখন্ড নিয়ে বক্তব্য রেখে বাংলাদেশের মেধাবী দুই পেশাজীবী গোষ্ঠীকে চরম অপমান করেছেন। তার মত অভিজ্ঞ একজন রাজনৈতিক নেতার কাছে আমরা এরকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য আশা করি না।
আমরা আশা করি তিনি তার ভুল বুঝবেন ও রাজনৈতিক শিষ্টতার অংশ হিসেবে এই অসত্য মানহানিকর ঢালাও মন্তব্যের জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসক ও প্রকৌশলী ; এই দুটি পেশাজীবী সমাজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্যটি প্রত্যাহার করবেন।
সময় জার্নাল/আরইউ