ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সেনুয়া ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতার সংবাদ সংগ্রহের সময় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া জেলার তিন আহত সাংবাদিককে এবার হাসপাতালে এসে মামলা করলে হত্যা করার হুমকি দিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করে লোকসম্মুকে হুমকি দেয় এ ছাত্রলীগ নেতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময়। তিনি রুহিয়া থানা ছাত্রলীগ শাখার সদস্য সচিব পদে রয়েছেন।
এ তথ্য তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নিশ্চিৎ হওয়া গেছে এবং সাংবাদিকদের উপর হামলার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজেও তাকে দেখা গেছে। সেই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর স্ট্যাটাসও দেখা যায় তার ফেসবুক আইডিতে।
আহত সাংবাদিকদের স্বজনরা জানান, হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন আহত সাংবাদিকরা। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্য, স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরাও উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ মুখে মাক্স ও টুপিসহ জ্যাকেটে পড়ে তাদের চিকিৎসাধীন থাকা সার্জারি ওয়ার্ডের ৫০৩ নাম্বার কক্ষে প্রবেশ করেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা স্বরুপ কুমার সেন তন্ময়। সে সময় ওই ছাত্রলীগ নেতা সবার সামনে হুমকি দেয় যে, "মামলা করলে পরিণতি ভালো হবেনা। বেশি বারাবারি করলে এরপর তিনজনের লাশও কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।"
এ কথা শোনার পর সাংবাদিক তানুর চাচাতো ভাই মাসুম রেজা তার মাক্স খুলতে বললে সে উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করে।
পরে ওই ওয়ার্ডে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা ওই ছাত্রলীগ নেতার আচরণে ক্ষুদ্ধতা প্রকাশ করেন এবং উপস্থিত সবার তোপের মুখে পড়ে দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায় হুমকি দাতা স্বরুপ।
এ সময় তাকে আটকানোর চেষ্টা করা হলে তার জ্যাকেটের টুপি হাসপাতালে পড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুলিশকে ওই টুপি দেয়া হয়।
ওই ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন কুশাল খন্দকার বলেন, হামলার পর আবার মামলা না করতে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার না করা হলে এ দেশে সাংবাদিকতা পেশাটি বিলুপ্ত পেশা হতে বেশিদিন সময় লাগবেনা। এর জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে দাবি করেন তিনি।
এ ঘটনার পর নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে হামলার শিকার হওয়া তিন সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল ও সোহেল রানা।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসারত সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। হুমকিদাতা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিককে হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ঘটনার দিন গতকাল শনিবার শহর চৌরাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাংবাদিক মহল ও সাধারণ মানুষ। এছাড়াও এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান হামলার শিকার হওয়া আহত সাংবাদিকগণ।
সময় জার্নাল/আরইউ