নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা কর্তৃক কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উল্যাকে (৬৫) মারধর করে লাঞ্ছিত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নোয়াখালী জেলা বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ওমর ফারুক টফি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বসুরহাটে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন সংক্রান্ত কথপোকথনের এক পর্যায়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও রামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনছার উল্যাহকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে।
এ ঘটনায় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা কর্তৃক বিএনপি নেতা লাঞ্ছিত হওয়ায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো বলেন, অহেতুক বিনা কারেণে কাদের মির্জা বিএনপি নেতার গায়ে হাত দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর অভিযোগ গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে তিনি বসুরহাট পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের কুলখানি অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেয় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। তিনি তাকে ওই অনুষ্ঠানে আসতে দেখে বসা থেকে উঠে অন্য একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় কাদের মির্জা কতক্ষণ ওই স্থানে বসে থাকে। এক পর্যায়ে বসা থেকে উঠে এসে কাদের মির্জা আমাকে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে মুখে থাপ্পড় মেরে দেয়। থাপ্পড়ের সাথে সাথে আমার চোখের চশমা চোখ থেকে খুলে মাঠিতে পড়ে যায়। আমার মুখ ছিরে যায়। এরপর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর আরো উত্তোজিত হয়ে উড়ে এসে আবার আমাকে আরেক থাপ্পড় দিয়ে গায়ে থেকে আমার চাদর ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জার ভাগনে রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজিস সালেকিন রিমন বলেন, আমার ভোট করায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনছার উল্যাহকে মারধর করে কাদের মির্জা। এ ঘটনা শুনতে পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি তাকে দেখতে যাই। ভুক্তভোগী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার সমর্থককে মারধর করায় আজ সন্ধ্যায় রামপুর ইউনিয়নের বামনী বাজারে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাজ্জাদ রোমন জানান, বুধবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ দুই পক্ষকে বামনী বাজার থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন আমিসহ ৭জন পুলিশ সদস্যকে আহত করে। তিনি আরো বলেন, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০জনকে আসামি করে পুলিশ এ্যসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/ইএইচ