জীবন হক। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে মধ্যরাত থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ফসল ও বসতির ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে কৃষিকাজ।এতে শ্রমিকের জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে প্রাণীকূলেও।
শুক্রবার সদরের আকচা ইউনিয়নে ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আগাম গমের ক্ষেত বাতাসের ভরে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেগেছে। মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি কোন শ্রমিককে। এছাড়াও সরিষা, ভূট্টা সহ সব ফসল এ বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দমকা হাওয়ায় গরীব মানুষের টিন চাতাইয়ের ঘর উড়েগেছে। সেগুলো মেরামত করছেন মানুষজন।
কৃষক আতাউর রহমান জানান, এবারে ৩ বিঘা জমিতে আগাম গমের আবাদ করেছেন তিনি। তার গম দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কিন্তু গত মধ্যরাতের মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারনে তার গমের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। গম মাটিতে নুইয়ে পড়েছে।
আলুচাষী করিম বলেন, ৭ বিঘা মাটিতে আলু উৎপাদন করেছি। আজ আলু উত্তোলণের কথা ছিলো। এখস বৃষ্টির কারনে কাজ বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরা এসে ঘুরে চলে গেল।
দিনমজুর রহমত মিয়া বলেন, আলুর কাজে এসেছিলাম। দেখি আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। তাই কাজ বন্ধ। তাই ফিরে যাচ্ছি।
স্থানী মানিকের ঘর দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে, তিনি ঘর মেরামত করছেন। এসময় তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এনজিও থেকে লোন নিয়ে টিনের ঘরটি বানিয়েছি। বাতাসে টিন উড়ে গেছে। সেগুলো আবার কুড়িয়ে এনে ঘর মেরামত করছি। আজ আর বাইরে কোন কাজে যাবোনা।
ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবু হোসেন বলেন, রাতে ৯ মিলি মিটার বৃষ্টি হয়েছে সাথে দমকা বাতাস। এতে আগাম গমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে এবং কৃষিকাজ ব্যহত হয়েছে। কৃষকরা এখন আলু ক্ষেতে পানি না শুকানো পর্যন্ত আলু উত্তোলণ করা থেকে বিরত থাকবে, সেই সাথে সার কিটনাশক ব্যবহার বন্ধ রাখবে। এখন সবচেয়ে জরুরি জমাট পানি ক্ষেত থেকে বের করার ব্যবস্থা করা।
উল্লেখ্য যে, আজ পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর কাছাকাছি তাপমাত্রা বিরাজ করে ঠাকুরগাঁওয়ে। দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে। এমন অবস্থায় কর্মহীন হয়ে আজ ঘরবন্দী মানুষ। গবাদি পশু সহ প্রাণীকূলেও এর চরম প্রভাব পড়েছে।
সময় জার্নাল/আরইউ