বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২২
ডা.জামান সানি:
একটু কল্পনা করুন,
রাস্তা দিয়ে একজন সনাতন ভদ্রমহিলা যাচ্ছেন৷ দিনের আলোয় প্রকাশ্য হাজার হাজার মানুষের সামনে কিছু ধর্মান্ধ মৌলবাদী পুরুষ "ইয়া আলী" বলে তেড়ে আসলেন৷ তার একমাত্র অপরাধ সে ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী৷
তখন একজন সুস্থ স্বাভাবিক বাংলাদেশী এরকম সিচুয়েশানে কি করতেন? অবশ্যই সেই মহিলার পাশে দাড়াতেন এবং সেই ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ তৈরি করতেন৷
আমি বলছি না, সবাই তাই করতেন, তবে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ তাই করতেন৷ এবং সেই ভদ্রমহিলাকে মুখ ফুটে একটা শব্দও বলতে হতো না, আশেপাশের মানুষই সেই ধর্মান্ধদের সিস্টেম করে দিতেন৷
কিন্তু আমি অবাক হয়ে দেখলাম, ভারতের মতো একটি ঐতিহাসিকভাবে কসমোপলিটান দেশ এতোটাই মৌলবাদী রাষ্ট্রে রূপ নিয়েছে যে এই সিচুয়েশানে একজন মানুষও সেই নিরস্ত্র নারীর হয়ে প্রতিবাদ করেনি৷ ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা সব জায়গায় আছে, সব দেশে আছে, কিন্তু এরা কখনোই এতোটা স্পর্ধা করতে পারে না, যদি না তাদের শক্তিটা রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে আসে৷ আর সেকারণেই সাধারণ মানুষ একটা সময় এদের ভয় পাওয়া শুরু করে৷ এই ধরনের সিচুয়েশান যে দেশেই হোক, যেই ধর্মের মানুষের সাথেই হোক, যেই ব্যক্তির সাথেই হোক, সিচুয়েশানটা ভীষণ হতাশাজনক৷
তবে আশাজাগানিয়া ব্যপারটা ছিলো, মেয়েটা যেভাবে প্রতিবাদ করেছে সেটা! তার হয়ে কেউ লড়েনি, কিন্তু সে নিজের জন্য লড়ে দেখিয়েছে৷ জানোয়ারগুলো তেড়ে আসছিলো, কিন্তু সে একটুও ভয় পায়নি৷ এই হায়েনাগুলো তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতো, কিন্তু সে সেটার প্রতিবাদ করেছে৷
মেয়েটার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা৷