মুরাদ ইমাম কবির, হিলি : ৯৯৯-এ কল পেয়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে রাস্তায় ফেলে যাওয়া এক শতবর্ষী বৃদ্ধা মা কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বিভিন্ন রকম সহায়তা দিয়ে আবারও ছেলের হাতে তুলে দেয়া হয়।
পুলিশ জানায়, শতবর্ষী বৃদ্ধা হালিমা খাতুন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়নের দামোদারপুর সৌলা গ্রামের মৃত রজ্জব আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রায় কয়েক যুগ আগে স্বামী রজ্জব আলীকে হারিয়েছেন তিনি।
নিজের গর্ভের কোন সন্তান না থাকলেও, সতীনের ঘরের দুই ছেলে মেয়েকে জন্মের পর থেকেই আগলে রেখে বড় করেছেন হালিমা। নিজের নামে থাকা অর্থ-সম্পদ ও জমি-জমা সবই লিখে দিয়েছেন দুই ছেলে মেয়ের নামে। তবে শেষ বয়সে এসে সন্তানের ঘরে তার আর ঠাঁই হয়নি।
গতকাল শনিবার সকালে শারীরিক অসুস্থ হালিমা খাতুনকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় ছেলে আতিয়ার রহমান। স্থানীয় এক প্রতিবেশী জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানালে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এএসআই সারোয়ার জাহান দুপুরে হালিমা খাতুনকে রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং ছেলে আতিয়ার রহমান কে আটক করে।
আজ রবিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম, হালিমা খাতুনের ছেলে আতিয়ার রহমানকে শেষ বারের মত
সতর্ক করে হালিমা খাতুনকে ছেলের হাতে তুলে দেন।
৯৯৯-এর সহায়তায় সেবা নিয়ে শতবর্ষী বৃদ্ধা হালিমা খাতুন পেয়েছেন ছয় রকমের সহায়তা। তার অসহায়ত্বের কথা শুনে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ
সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য শিবলী সাদিক, হালিমা খাতুনকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন এবং তাকে একটি সরকারী ঘর করে দেবেন বলে আশ্বস্থ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফিউল আলম দুই বস্তা শুকনো খাবার দেন এবং বৃদ্ধাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড প্রদান করেন।
এছাড়াও ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন তাকে একটি হুইল চেয়ার উপহার দেন। পাশাপাশি হালিমা খাতুন যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন ৩নং সিংড়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রতিমাসে তাকে ২০ কেজি করে চাল দিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
সময় জার্নাল/এমআই