বুধবার, ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২২
সময় জার্নাল ডেস্ক :
গলা টিপে বালিশ চাপা দিয়ে মেয়েকে মারছি। পারলে আমার হাত দুটো কেটে ফেলেন। কাটেন! কাটেন আমার হাত! নিজের এক বছর ৫ মাস বয়সী শিশু কন্যাকে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পন করে পুলিশের কাছে এমন অভিব্যাক্তি জানিয়েছেন নাজমিন আক্তার নামের এক নারী।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে সিলেট শাহপরাণ এলাকার নিপুবন আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নাজমিন জাহানকে (২৮) আটক করেছে সিলেট কোতোয়ালি থানাপুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিশুর বাবাকেও পুলিশ থানায় নিয়ে এসেছে। নিহত শিশুর নাম সাবিহা আক্তার।
অভিযুক্ত নাজনীন জাহান সিলেট নগরীর শাহপরান নিপোবন এলাকার বাসিন্দা কাতার প্রবাসী সাব্বির হোসেনের স্ত্রী ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার কালিকৃষ্টপুর গ্রামের মো. জিয়া উদ্দিনের মেয়ে। তিনি স্কলার্স হোম স্কুল পাঠানটুলার একজন সাবেক শিক্ষিকা। বর্তমানে টিউশনি করে সংসার চালান। ঘটনাটি ঘটেছে শাহপরাণ থানা এলাকায়। অভিযুক্ত মাকে পুলিশ আটক করেছে শিশুটিকে কেন হত্যা করা হয়েছে- জানতে চাইলে নাজনীন জানান, তার স্বামী তার মেয়ের এবং তার কোনো খোঁজ খবর রাখতেন না। পারিবারিক নানা কলোহের জের ধরেই এ হত্যাকান্ড।
পারিবাহিক কলহের জেরে সাবিহাকে গলা টিপে তার মা নাজমিন হত্যা করেন বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
তিনি বলেন, ওসমানী হাসপাতালে ওই নারী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন। তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। আর শিশুর মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই নারীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তার স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ আরও বলেন, শিশুটির বাবার বাড়ি দক্ষিণ সুরমার বলদি এলাকায়। তিনি কাতার প্রবাসী। সম্প্রতি তিনি দেশে ছুটিতে এসেছেন। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না থাকায় স্ত্রী (নাজমিন) শাহপরাণ এলাকার নিপুবন-৪৯ এ আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং স্থানীয় একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। সঙ্গে তার ছোট বোন ও আগের স্বামীর ঘরের এক সন্তান থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে বুধবার বেলা ২টার দিকে ১৬ মাস বয়েসি শিশু সাবিহার মুখে বালিশ দিয়ে চাপা দেন। পরে গলাটিপে ধরেন। এসময় বিষয়টি দেখতে পেয়ে নাজমিনের কবল থেকে তার বোন শিশুটিকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এসময় নাজমিন সেখান থেকে পালাতে চেষ্টা করলে উপস্থিত লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে তিনি কোতোয়ালি থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে নাজমিন বালিশচাপা ও গলাটিপে ধরার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সময় জার্নাল/এসএম