বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২২
রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে জাতীয় পরিচয় পত্রে সন্তানের থেকে মুক্তিযোদ্ধা বাবার বয়স কম হবার ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ প্রায় দু’বছর ধরে। পরিবারের সদস্যদের দাবী জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ঘুরেও সুরহা না পেয়ে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান ৯৪বয়সী মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, জেলার ভূরুঙ্গমারী উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুলার কুটি গ্রামের মৃত: বাবন শেখের পুত্র মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী। প্রায় ৪৩বছর বয়সে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা ১৭ নং বই ৪০১৪৭ ক্রমিক,লাল মুক্তিবার্তায়-৩১৬০৪০৫২০ ক্রমিক এবং ২০০৫সালের ২১ মে বেসামরিক গেজেট ৩৭৯১ পৃষ্ঠায় গেজেট ১০৬৪ নং এ তার নাম রয়েছে। তিনি ২০০৮সালের ১অক্টোবর হতে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছিলেন।
২০২০সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য অনলাইনে পূরণ করতে গিয়ে তিনি জন্ম তারিখের ত্রুটির কারণে ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। জন্ম সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৯২৮সালের ১১ আগষ্ট। কিন্তু ২০০৮সালে জাতীয় পরিচয় পত্রে তার বয়স দেখানো হয়েছে ১৯৭১সালের ১০মে। অথচ তার বড় ছেলে আমির হোসেনকে তার থেকে বড় দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ বাবার থেকে ছেলে বড়। জাতীয় পরিচয় পত্রে বড় ছেলে আমির হোসেনের বয়স দেখানো হয় ১৯৬০সালের ২মার্চ। জন্ম তারিখ সংশোধন হবার পূর্বেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী গত ৪ ফ্রেব্রুয়ারিতে মারা যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেওয়া বলেন,ভাতা বন্ধ হবার পর থেকে উনি অসুস্থ হয়ে পড়ল।
সাবেক ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার জামাল উদ্দিন বলেন,মরহুম আকবর আলী প্রকৃত একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার বয়স ঠিক করার জন্য আমরা বহু চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু কেন হইল না তার সঠিক কারণ আমরা জানি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবী সঠিক তদন্ত করে মৃত আকবর আলীর ভাতা পূণরায় চালু করে দিতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
এই বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম রাকিব বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদনটি তা বিবেচনা করে “গ” ক্যাটাগরি অন্তর্ভুক্ত। ইতোমধ্যে এই আবেদনটি নিষ্পত্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পূন্ন করে প্রতিবেদন সাবমিট করা হয়েছে।
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বলেন,আমি ঢাকায় মিটিং শেষ করে রংপুর ফিরছি। বিষয়টি আমার নজরে আসল আমি যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করার আশ্বাস দেন।
সময় জার্নাল/এলআর