আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
২০০৮ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে সিরিজ বোমা হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সেখানকার একটি আদালত। এছাড়া আরও ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ১ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত; মামলার বাকি ২৮ জন আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
শুক্রবার আহমেদাবাদের একটি জজ আদালতের বিশেষ বিচারক এ আর প্যাটেল এই রায় ঘোষণা করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
২০০৮ সালের ১৬ জুলাই আহমেদাবাদের আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, গণপরিবহন ও বাণিজ্যিক এলাকায় একযোগে ২০ টি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল। এতে নিহত হয়েছিলেন ৫৭ জন, আহত হয়েছিলেন আরও কয়েক শ মানুষ।
ভারতের নিষিদ্ধ ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এই হামলার দায় স্বীকার করে। সে সময় অবশ্য এই সংগঠনটি স্বল্প পরিচিত ছিল। ২০১০ সালে মহারাষ্ট্রের পুনে জেলায় একটি বেকারি কারখানায় বোমা হামলার পর এই গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারতের সরকার। ওই হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছিলেন।
আহমেদাবাদে বোমা হামলায় যুক্ততার অভিযোগে ৭৮ জনকে আসামি করে অভিযোগ গঠন করে ২০০৮ সালেই বিচারকাজ শুরু হয় আহমেদাবাদের জজ আদালতে। বিচারের এক পর্যায়ে আইয়াজ সাঈদ নামের এক আসামি রাজসাক্ষী হয়ে যান।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, মামলার বিচারকাজ চলার সময় মোট ১ হাজার ১৬৩ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।
অবশ্য নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে গুজারাট হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। আসামীপক্ষের আইনজীবী খালিদ শেখ জানিয়েছেন হাইকোর্টে তারা আপিল করবেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যে ১৩ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন; কিন্তু জজ আদালত তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন। আমরা হাইকোর্টে আপিল করব।’
মামলা চলার সময় যে কারাগারে আসামিদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, ২০১৩ সালে একবার চোরা সুরঙ্গ খুঁড়ে কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন কয়েকজন আসামি; কিন্তু কারা কর্মকর্তারা টের পেয়ে যাওয়ায় সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
এমআই