সময় জার্নাল প্রতিবেদক : সকল টিভি ক্যাবল অপারেটরদের করের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটরদের কাছ থেকে যে কর পাই, সেটি খুব নগণ্য। এই জায়গায় করজাল সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। আমরা সেটি এক্সপ্লোর করতে চাই। তবে তার জন্য সকল অপারেটরদের এক প্লাটফর্মে আনা জরুরি। সিস্টেম ডিজিটালাইজড করার প্রয়োজন।’
বুধবার নিউজ পেপার্স ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও দেশীয় টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)’র সঙ্গে এনবিআরের ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাকবাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, টিভি ক্যাবল অপারেটরদের যেসব এসোসিয়েশন আছে, তাদের সহযোগিতায় আমরা সকল অপারেটরের ভ্যাট নিবন্ধন ও ইটিআইএন করাতে পারি। সেটি করা গেলে সেখান থেকে অনেক রাজস্ব আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, সকল ক্যাবল অপারেটেরদের এক প্লাটফর্মে আনার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব। তারা যেন একটা নীতিমালা করে দেন, যাতে ক্যাবল অপারেটরের এক প্লাটফর্মে চলে আসে।
সংবাদপত্রের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের উপর থেকে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাবের বিষয়ে রহমাতুল মুনিম বলেন, নিউজপ্রিন্টের উপর আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হয়, শুধুমাত্র রাজস্ব আহরণের চিন্তা থেকে নয়। এখানে দেশীয় শিল্প বিকাশের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন করছে। তাদের কাগজের মান কেমন হচ্ছে-এটি আমরা পর্যালোচনা করব।
নোয়াব সভাপতি ও দৈনিক সমকালের মালিক এ কে আজাদ বলেন, সংবাদপত্র একটি সেবামূলক শিল্প। বর্তমানে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এই শিল্প খারাপ সময় পার করছে। তাই অন্যান্য শিল্পের ন্যায় ট্যাক্স-ভ্যাট দিয়ে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সংবাদপত্রের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের উপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্কসহ সব মিলিয়ে বর্তমানে ৩০ শতাংশ ভ্যাট ও শুল্ক দিতে হচ্ছে। তিনি করোনা পরিস্থিতির কারণে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার ও অন্যান্য করহার কমানোর প্রস্তাব করেন।
অ্যাটকো সহসভাপতি মোজাম্মেল বাবু সংবাদপত্রের ন্যায় টেলিভিশন বা ইলেকট্রনিক্স মিড়িয়াকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এতে করে টেলিভিশন মালিকদের জন্য ট্যাক্স-ভ্যাট দেয়া সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশীয় বিজ্ঞাপনের এক চতুর্থাংশ বিদেশে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তাদের বিজ্ঞাপন বিদেশের চ্যানেলে বেশি প্রচার করছে। এতে সরকার বড় আকারে রাজস্ব হারাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মোজাম্মেল বাবু মনে করেন বিদেশের টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে যথার্থভাবে ভ্যাট ট্যাক্স আরোপ করা গেলে দেশীয় বিজ্ঞাপন বিদেশে যাওয়া যেমন বন্ধ হবে, তেমনি বাড়তি রাজস্বও পাবে।
তিনি বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনা বা সিস্টেম ডিজিটালাইজড করা গেলে সরকার বছরে এই খাত থেকে অন্তত ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পাবে।
আলোচনায় ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক হানিফ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
সময় জার্নাল/এমএম