নিজস্ব প্রতিবেদক:
অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রয়াত লেখক এমএনআর সামন্তের বই ‘অপারেশন এক্স’।ঐতিহাসিক এই বইয়ের বাংলা অনুবাদ করেছেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ। বাংলায় প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের বইপত্র প্রকাশন। এবারের বইমেলায় বইটি বইপত্র প্রকাশনীর ৫১, ৫২, ৫৩ নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর যৌথ নৌ-কমান্ডো অভিযানের ঘটনাবলী নিয়ে লেখা ‘অপারেশন এক্স’ বইটি। অপারেশন এক্স ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্বে পরিচালিত বৃহত্তম গোপন অভিযান। বইটিতে বলা হয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি নৌ-কমান্ডোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছিল। যারা নৌযান, জেটি এবং সামুদ্রিক অবকাঠামো ধ্বংস করে পাকিস্তানি সামরিক ও খাদ্য সরবরাহ লাইনগুলোকে ব্যাহত করে দিয়েছিলো। পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের গোপন নৌযুদ্ধের এমন আরো অপ্রকাশিত গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যার মাধ্যমে পাঠকরা জানতে পারবে মুক্তিযুদ্ধের অজানা কাহিনী।
৪৮ বছর ধরে অপ্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের এসব বীরত্ব গাঁথা প্রথম ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। এই বইতেই মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নৌযোদ্ধাদের অপারেশনের নানান বর্ণনা প্রথম উঠে এসেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা প্রয়াত ক্যাপ্টেন এম এন আর সামন্তের ব্যক্তিগত নোট এবং অপারেশনে অংশ নেওয়া ভারতীয় নৌসেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে বইটি সংকলিত হয়েছে। ইংরেজি বইটি প্রকাশ করে হারপারকলিন্স পাবলিকেশনস।
বইটির লেখক প্রয়াত এমএনআর সামন্ত ভারতীয় নৌবাহিনীর হয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গোপন এই অপারেশনের নেতৃত্বে ছিলেন। অপারেশনটির পরিকল্পনা করেছিলেন তৎকালীন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এসএম নন্দা ও ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে ভাইস অ্যাডমিরাল) মিহির কে রায়।
বইটির বাংলা ভাষায় ভাষান্তর করা ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জল-স্থল বাহিনীর ভুমিকা এখনো বহু মানুষের অজানা। এখনো তরুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানেন না। অপারেশন এক্স পড়লে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য জানা যাবে। বইটি বলতে গেলে মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি দলিল। ভারতীয় নৌসেনাদের এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে সংকলিত হয়েছে। এম এন আর সামন্তকে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় ২০১২ সালে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দেওয়া হয়।
এমআই