এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজলা নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
নানা অনিয়মের অভিযােগের সত্যতা পাওয়ায় বাংলাদশ নির্বাচন কমিশন সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন।
চরভদ্রাসন উপজেলার সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালিন সময়ে নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান, মেম্বার প্রার্থীদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযােগ উঠে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়র সচিব মাঃ হুমায়ুন কবীর খাদকার স্বাক্ষরিত এক পত্রে অভিযুক্ত ওই নির্বাচন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। যার স্মারক নম্বর ১৭.০০.০০০০.০৮৩.২৭.০১০.২২-৯৩।
বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের দায়ের করা অভিযােগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদশ নির্বাচন কমিশনর সিনিয়র সহকারী সচিব (সংস্থাপন-১) মোঃ জিলহাজ উদ্দিন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান তদন্তকালে অভিযােগের সত্যতা পান। সে অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দেন নির্বাচন কমিশনে।
এরই পরিপেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত আদেশপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য(মেম্বার) প্রার্থী আব্দুর রউফ ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আহসানুল হক মামুনের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় সংক্রান্ত অভিযােগটির সত্যতার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবে সােনালী ব্যাংক শাখায় ২০০৯৯০১০১৪৪৫৭ নং হিসাব নির্বাচন পূর্ব, নির্বাচন চলাকালিন ও নির্বাচন পরবর্তি সময়ে অর্থাৎ গত ৭ অক্টােবর হতে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মােট ২৩ লাখ ৫ হাজার টাকা জমার প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে উক্ত ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত টাকার সুনির্দিষ্ট উৎস দেখাতে ব্যর্থ হন ওই নির্বাচন কর্মকর্তা।
অভিযােগকারীদের কাছ থেকে গত ২ নভেম্বর নির্বাচন কর্মকর্তা পৌনে দুই লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহন করে পরের দিন তার ব্যাংকে জমাকৃত টাকার বিষয় অভিযাগকারীদের বক্তব্যর সত্যতা পাওয়া যায়। উক্ত নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহন ও দুর্নীতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তার এরুপ কার্যকলাপ শৃঙ্খলা পরিপন্থি।
উক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা কর্তৃক সংগঠিত কর্মকান্ড সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি (৩) খ অনুযায়ী 'অসাদাচরণ' এবং বিধিমালা ৩ (ঘ) অনুযায়ী 'দুর্নীতি পরায়ণতা' এর শামিল। তাই উক্ত নির্বাচন কর্মকর্তাকে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সরকারি চাকুরী হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলাে। সাময়িক বরখাস্তকালিন সময়ে নির্বাচন কর্মকর্তা প্রচলিত বিধি মােতাবক শুধুমাত্র খােরাকি ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে উঠা নানা অনিয়মের অভিযােগের সত্যতা পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, মােহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/ইএইচ