শিশির আসাদ (সিইও), ডিইউ মেনটরস :
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী পহেলা এপ্রিল ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন। তবে পরীক্ষা পেছাবে কিনা সেটি সরকারের সিদ্ধান্ত। পরীক্ষা যদি না পেছায় সেক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুদের হাতে সময় আছে মাত্র এক মাস। এই অল্প সময়ে কীভাবে প্রস্তুতি নিলে পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব, আজকের মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতিতে সে বিষয়েই আলোচনা করব।
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক পরীক্ষার মান বণ্টন: মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ৩০০। এর মধ্যে ২০০ নম্বর থাকে এসএসসি ও এইচএসসি ফলাফলের উপর। আর এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত নম্বর ১০০। এর মধ্যে জীববিজ্ঞান ৩০, পদার্থ বিজ্ঞান ২০, রসায়ন ২৫, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি: প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিটি বিষয় ভালো করে রিভিশন দেওয়া জরুরী। কারণ একমাত্র ভালো রিভিশনই পারে পরীক্ষায় সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে। মনে রাখতে হবে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অনেক জটিল কিংবা প্যাচ মারা ইকুয়েশন অথবা মাথা ঘুরানো রিয়াকশন খুব একটা থাকে না। ভালো প্রিপারেশন থাকলে খুব সহজেই এগুলো উত্তর করা যায়। একে একে সবগুলো বিষয় নিয়ে কিভাবে প্রিপারেশন নিতে হবে সেটা বিস্তারিত ভাবে লিখছি-
সাধারণ জ্ঞান: যেকোনো সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলি শেষবারের মতো দেখে নাও।
ইংরেজি: বিগত বছরগুলোতে মেডিকেল ও ডেন্টাল প্রশ্নপত্রে যেসব বিষয়ের ওপর ইংরেজি প্রশ্নগুলো (যেমন Voice, Narration, Synonym, Antonym, Correction, Spelling, Preposition, Phrase & Idioms ইত্যাদি) সেগুলো সমাধান করার পাশাপাশি ভালো কোনো গ্রামার বই থেকে ওই বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত পড়তে হবে।
পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গাণিতিক সমস্যা: পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিগত ১০ বছরের মেডিকেল এবং ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর বারবার রিভিশন দিতে হবে। এই কয়দিন শুধু বইয়ের দাগানো তথ্যগুলো রিভিশন দিতে হবে।
পরীক্ষার আগের ৩০ দিন: প্রতিদিন একটি করে বই রিভিশন দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
পরীক্ষার আগের দিন করণীয়: মূল পরীক্ষার আগে প্রিপারেশন শেষ করা জরুরি। পরীক্ষার ঠিক আগের দিনটিতে বেশি পড়ালেখা করার কোনো দরকার নেই। রিলাক্স মুডে থাকতে হবে। নিজের সিট কোথায় পড়ল, সেটা একবার দেখে আসাটা বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ পরীক্ষার দিন সকালে তাহলে আর টেনশনে পড়তে হবে না।
পরীক্ষার দিন করণীয়: যেখানে তোমার সিট পড়েছে, সেই হল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবেশ করতে হবে। ধীর স্থির হয়ে বসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন বলপয়েন্ট কলম, পেনসিল, ইরেজার, প্রবেশপত্র টেবিলে রেখে পরীক্ষক প্রশ্নপত্র তোমাকে দেওয়ার পর সাবধানে নির্ধারিত ঘরগুলো পূরণ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই যেন ওএমআর ফরমের নির্ধারিত ঘরগুলো পূরণে ভুল না হয়, সেদিকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
প্রথম ৩০ মিনিটে ৫৮-৬০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফেলতে হবে। পরের ২০ মিনিটে বাকি ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। শেষ ৮-১০ মিনিট রিভিশন এবং উত্তর না দেওয়া প্রশ্নগুলো সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। কোনো একটি প্রশ্ন না পারলে সেটির পেছনে অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না।
বিশেষ সতর্কতা: একটা কথা মনে রেখো সবাই। স্বপ্ন কখনোই কিনতে পাওয়া যায় না। ১০০ টাকার একটা সাজেশন তোমার কাছে অনেক ভালো লাগবে, অস্থির লাগবে। কিন্তু সেটা তোমার স্বপ্ন কিনে দিবে না। মূল কাজ তোমারই!! তাই এই গুরুত্বপূর্ণ শেষ মাসটার সঠিক ব্যবহার করো দেখবা তুমি সফল হয়ে গেছো।