সংঘাত থেমে যাবে
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
একদিন নিশ্চয় যু্দ্ধটা থেমে যাবে,
আমাদের আকাশটা হয়ে যাবে শান্ত।
মর্টারের শেল কি'বা বারুদের গন্ধ,
স্মৃতির পাতাটা থেকে হয়ে যাবে ভ্রান্ত।
পারমানবিক বোমা, কাঁটাতার লঙ্ঘন,
দেশে দেশে রেষারেষি, আইনের ছল।
ইতিহাসে রয়ে যাবে যুদ্ধের অঙ্গন,
মানচিত্রের দাবী, মিছে লোকবল।
পৃথিবীর আকাশটা জঙ্গি বিমানহীন,
পাখির ডানাটা ছোঁবে সূর্যের রঙ,
আকাশ ঝাঁপিয়ে রবে বৃষ্টির কোলাহল,
বিষাক্ত গ্যাসহীন বাতাসের ঢঙ।
একদিন নিশ্চয় শান্তি আসবে ফিরে,
পৃথিবীর অলিগলি, নদী বন্দরে।
শেলের আঘাতে শিশু হারাবেনা শৈশব,
প্রশান্তি জুড়ে রবে গৃহ-অন্দরে।
বড়ো বড়ো নেতা যারা, স্মিত হাসি হেসে
মিলবেনা চুক্তিতে করমর্দনে।
সন্ধি-চুক্তি কিছু রইবেনা প্রয়োজন,
বাঁচবে মানুষ, উঁচু শির, গর্দানে।
একদিন নিশ্চয় যু্দ্ধটা থেমে গেলে,
জেরুজালেমের পথে চলে যাবো হেঁটে।
মুক্ত বাতাসে নেবো প্রাণভরে নিঃশ্বাস,
গাজায় সাগর তীরে দিন যাবে কেটে।
কতো শিশু কোলাহলে, ভূমধ্যসাগর তীরে,
সূর্যের উষ্ণতা মিশে যাবে গায়ে।
জুদাইন পর্বতে ঝিলিমিলি সানবার্ড,
উড়বে মুক্ত বনে ডানা মেলে দিয়ে।
হয়তো সেদিন আল-আকসার দরজাটা
হাট করে খোলা রবে মানুষের তরে,
রইবেনা সান্ত্রী, সঙ্গীন উঁচিয়ে,
মানুষ ফিরবে ফের আল্লাহর ঘরে।
একদিন নিশ্চয় সংঘাত থেমে যাবে,
মানুষ বাঁচবে, এক প্রভু বিশ্বাসে।
সূর্যের উদয় থেকে অস্তের শেষ হাসি,
হৃদয়ে থাকবে আশা, হৃদয় উচ্ছ্বাসে।
কাশ্মীরি কন্যারা ফুটবে ফুলের মতো,
আভিজাত্যের মহা কোমল আবরণে।
বয়সী, বৃদ্ধ কি'বা শিশু, যুবা, প্রৌঢ়,
তাকবীর ধ্বনি হবে জাতীয় শ্লোগানে।
ঝিলাম নদীর বুকে আকাশের নীল মেখে,
নীলাচল স্রোতোধারা বয়ে যাবে ধীরে।
অধর্ম পাণ্ডারা দাঁড়াবেনা বাঁধ হয়ে,
কাশ্মীরি জনতার স্বাধীনতা ঘিরে।
একদিন নিশ্চয় পৃথিবী শান্ত হবে,
মানুষ একই জাতি, ইনসান নাম।
মানুষ পারবে ফের ভুলে যেতে ভেদাভেদ,
মানুষই পারবে দিতে মানুষের দাম।
যে ছেলেটি হারিয়েছে যুদ্ধের তাণ্ডবে,
উঠোনে একলা বসে ব্যাথাতুর মাতা।
যে মেয়েটি হারিয়েছে সম্ভ্রম, গৌরব,
পিতা, পুত্র, স্বামী কি'বা তার ভ্রাতা।
হয়তো তারাও সেই সুদিনের পথ চেয়ে
ফেলছে চোখের পানি আাশাবাদী মনে,
হয়তো সেদিন আর ফিরবেনা প্রিয়জন,
তবুও আসবে সুখ প্রতি জনে জনে।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৫ মার্চ ২০২২।